Social Icons

twitterfacebookgoogle pluslinkedinrss feedemail

Featured Posts

Om Namah Shivay

ব্রহ্মাদিতৃণপর্য্যন্তং মায়য়া কল্পিতং জগৎ। সত্যমেকং পরং ব্রহ্ম বিদিত্বৈবং সুখী ভবেৎ।।

www.tantrasar.blogspot.in/

আত্মা সাক্ষী বিভু: পূর্ণ: সত্যেহদ্বৈতঃ পরাৎপরঃ। দেহস্থোহপি ন দেহস্থো জ্ঞাত্বৈবং মুক্তিভাগ্‌ভবেৎ।।

www.tantrasar.blogspot.com/

মনসা কল্পিতা মূর্ত্তি নৃণাঞ্চেন্মোক্ষসাধনী। স্বপ্নলব্ধেন রাজ্যেন রাজানো মানবো স্তদা।।

www.tantrasar.blogspot.in/

জীবন্মুক্তৌচ যা মুক্তিঃ সা মুক্তিঃ পিণ্ডপাদনে। যা মুক্তিঃ পিণ্ডপাতনে সা মুক্তিঃ শুনিশূকরে।।

ওঁ নমঃ শিবায়

জীবঃ শিবঃ সর্ব্বমেব ভূতে ভূতে ব্যবস্থিতঃ। এবমেবাভিপশ্যতি জীবন্মুক্তঃ স উচ্যতে।।

Thursday, December 10, 2015

The Veera Sadhana

As is the competency of the sadhaka (male practitioner) so also that of the sadhika (female practitioner). Only by this is success achieved and not in any other way, even in ten million years - Mahakalasamhita, quoted in Shakti and Shakta, Woodroffe

(This English translation of chapter 13 from the Brihad Nila Tantracovers meditation and the vira sadhana (heroic worship, which includes sexual intercourse) of Mahakali. It also outlines the principles of svecchacharya (the path of acting according to one's will) which is central to the Kaula school of tantra.)

Sri Bhairava said: Now I speak of the supreme mantra of Mahakali, bestowing all poesy. Listen attentively, O Maheshani. She is the primordial one, Prakriti, the beautiful woman, the primordial knower, with kalas, the Fourth, the ultimate mother, the boon giver, the desirable one, the lady of heroes, the giver of success to sadhakas.

She, the primordial one, Mahaprakriti, Kali, the true form of time, whose great mantra of all mantras is the ocean of mantra, she alone gives all success to a sadhaka who wants it. The destroyer of anxiety, giving boons, seated on a corpse, gives all desires, O Devi, and creates all marvels.

In this matter, purification of mind and determination as to defects or enmity in a mantra are unnecessary. In sadhana with this great mantra, there are no restrictions as to time, nor day, lunar mansion or obstacles caused by lunar mansions and so forth. Nor in Mahakali's sadhana is it necessary to consider guru.

Listen, Vararoha, to the all-poesy bestowing mantra. Two Hrims and two Hums, followed by three Krims and Dakshine Kalike, then pronouncing the previous bija mantras in reverse order, putting in front of it Om and Svaha last, is the mantra of twenty three syllables, the ultimately beautiful mantra. Using this king of mantras causes a person to become like Shiva, there is no doubt of it.

Bhairava is the rishi of the mantra, Ushnik is the metre, Mahakali is the Devi and Hrim is the seed. Hum is the Shakti and its application is well known. Vararohe, listen to the meditation. Reciting it gives siddhi, its practice gives the power of attraction, and it causes pashus to become viras.

I worship the greatly beautiful one, with limbs the colour of thunderclouds, who is naked and sits on the corpse of Shiva, who has three eyes and earrings made of the bones of two young handsome boys, who is garlanded with skulls and flowers. In her lower left and upper right hands she holds a man's head and a sword, her other two hands bestowing boons and banishing fear. Her hair is greatly dishevelled. Using this meditation, worship and satisfy the Paramesvari.

Listen, beauteous one, to the Gayatri, which gives all knowledge when recited. Saying Kalikayai and vidmahe, then say shmashanavasinyai dhimahi, and then tanno ghore pracodayat. Devi, after reciting it twenty times, it is the giver of all prosperity. Recite it 20,000 times to achieve success in its preparation. Do homa of a tenth part, oblation of a tenth part of that, and abhiseka of a tenth part of that. Then feed Brahmanas. Do everything necessary within the sadhana, then dismiss Devi and throw the pot into water.

I speak now of the great ritual which bestows both the visible and the invisible. Mantras become successful using this rite, which is to be performed in the first or third watch at night, and are powerless otherwise.

O Mahesvari, do vira sadhana in a house, or elsewhere on earth. Make a small platform strewn with bunches of plantain leaves and place on this a pot smeared with vermilion. In the pot place mango shoots and wine made of khadira blossoms, as well as asvattha and badari leaves. Also place in the pot pearl, gold, silver, coral and crystal and then strive to accomplish vira sadhana.

Draw a matrika cakra, placing the pot on top of it. A mantrin should put it on a cloth, facing the northern direction. After worshipping with various substances, one should offer food, unguent, mutton and the most attractive sorts of food. Then, O Devi, offer curd to the great goddess.

Have there a young and beautiful girl, adorned with various jewels. After combing her hair, give her tambula and draw two Hrims on her breasts, Aim on or near her mouth, and draw two Klims on either side of her yoni. Drawing her towards you by her hair, caress her breasts and then place the linga into her yoni pot.

O pure smiling one. Recite the mantra 1,000 times, O sweet faced one. Dearest, one becomes accomplished by doing the rite for a week. Maheshani, recite the mantra not in the manner written of in books, but in her yoni. This brings mantra siddhi, there is no doubt of it. So, Devi, the secret thing giving all desires has been declared to you. One should not reveal it, one should never reveal it, Maheshani.

O Naganandini, at the risk of your life, never reveal it. It is the giver of all siddhi. I cannot speak of the magnificence of this mantra. Had I ten thousand million mouths and ten thousand million tongues, I could still not speak of it, O Paramesvari.

It is the most secret thing in the three worlds, very hard to obtain, the great pitha Kamarupa, giving the fruit of all desires. Maheshani, reciting in this way gives endless fruit, if, by the power of good fortune one attains this pitha. O Maheshani, after reciting the mantra there, it gives endless fruit. Bhairavi, siddhi resides in that high place (described in) this tantra, without doubt.

Wednesday, May 06, 2015

অন্ধ বিশ্বাস

টিভি খুললেই এখন আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন রকমের ধর্মীয় বিজ্ঞাপন। খবরের কাগজে রাশি রাশি তান্ত্রিক দাবী করেন তারা যে কোন ইচ্ছা পাঁচ কিংবা দশ মিনিটে পূরণ করে দেবেন এবং তা গ্যরান্টী সহযোগে। যা স্বয়ং ভগবানও দাবী করেন না। সুলেমানী তন্ত্র থেকে হনুমান যন্ত্র সব কিছু এখন সহজলভ্য এবং অর্থের বিনিময়ে এই সকল ধর্ম ব্যবসায়ীরা আপনার বিধাতার লেখন বদলে দিয়ে আপনার বিধিলিপি নতুন করে লেখে দেবে এই ধারনা আপনি যদি করে থাকেন তাহলে জেনে রাখুন আপনার কষ্টার্জিত ধন আপনি কতকগুলি প্রতারক দের হাতে তুলে দিচ্ছেন মাত্র। মানুষের কিছু আবেগ কে সুড়সুড়ি দিয়ে এরা ফুলে ফেঁপে ঢোল হচ্ছে। ধর্মের উপর মানুষের যে মহান বিশ্বাস সেই বিশ্বাস কে নিয়েই এইসব প্রতারক রা ব্যবসা করে।

শনি রক্ষা কবচ – নীল কালো কাঁচের ছোট বড় কিছু পুঁতি যার দাম বাজারে হয়তো বড় জোর দশ টাকা, আপনাকে শনির প্রকোপের ভয় দেখিয়ে বিক্রি করা হল এক হাজার নয়শো নিরানব্বই টাকায়। মানুষের জীবনে সুখ কিংবা দুঃখের প্রবাহ সব সময় সমান ভাবে বয়ে যায় এমন নয়। ভালো সময় যেমন আসে, খারাপ সময় ঠিক তেমনই আসে তার জন্য শনি কবচ দরকার নেই, যেটা দরকার সেটা হল বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। নিজের দোষ-ত্রুটি গুলিকে স্বীকার করে নিয়ে তার সংশোধন। তাহলে খারাপ সময়টাকে আপনি নিজেই ভালো করে গড়ে তুলতে পারেন। আর ভগবান-ঈশ্বর-আল্লা ইত্যাদিতে যদি বিশ্বাস থাকে তা আপনার অতিরিক্ত পাওনা। যা আপনাকে সৎ, চৈতন্যময় এবং আনন্দিত থাকতে সাহায্য করবে। রক্ত-মুখী নীলা, শনি রক্ষা কবচ পরে আপনার কিছুই হবে না যদি আপনি নিজে থেকে সচেষ্ট না হন। ঐ জিনিস গুলি ধারণ করে আপনার অবস্থার উন্নতি না হলে আপনি আরও বেশী করে ভেঙে পড়বেন। আর সব থেকে খারাপ ব্যাপার যেটা হবে সেটা হল আপনি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস হারাবেন, দৈব কে খুব খেলো করে দেখবেন, কতকগুলি ধর্ম ব্যবসায়ীর ভণ্ডামির জন্য আপনি হারাবেন সত্যিকারের ভগবান কে আপনার অন্তর থেকে।

হনুমান চালিশা যদি একটি বলির পাঁঠার গলায় ঝুলিয়ে রাখা হয় তাও আবার কাঁচের মধ্যে লিখে যা হনুমানের মাথা ফুটো করে লেখা আছে তাহলে পাঁঠাটির কি কোন রকম উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আপনার মনে হয়। আসলে হনুমান চালিশা হল পরম বৈষ্ণব শ্রী হনুমানের গুন গান স্তব। যা পাঠ করে আপনি সেই পরম বৈষ্ণবের নাম-মাহাত্ম্য-লীলা আদি অনুধাবন করতে পারবেন, এবং আপনার আচরণে পরিবর্তন এনে হনুমান চালিশা আপনাকে বীর-সাহসী-সৎ এবং ভক্তিমান হতে সাহায্য করবে, আপনার হৃদয়ে এক অফুরন্ত আনন্দ স্রোতের সৃজন করবে কিন্তু কখন? যখন আপনি তা পাঠ করে হৃদয়ঙ্গম করবেন, নাহলে গলায় ঝুলিয়ে রাখলে তা কতকগুলি বর্ণমালা হয়ে কাঁচের ভেতরে জ্বলজ্বল করবে শুধু। একটা হনুমান চালিশার পুস্তকের দাম বাজারে হয়তো দশ টাকার বেশী নয় আর আপনি সেটাই কায়দা করে কিনছেন তিন হাজার টাকায় এখন হিসাব করে বলুন তো হনুমান চালিশা আপনি পরে যা লাভ করছেন তার থেকে বেশী লাভ তারা হনুমান চালিশা বেচে করছেন।

শ্রী লক্ষ্মী পাদুকা যন্ত্র। মা লক্ষ্মী নাকি তার ঐ টুকু খড়ম খানি আপনার বাড়িতে রাখা আছে জানলেই এসে রয়ে যাবে আপনার বাড়িতে। প্রথমত মা লক্ষ্মী বলতে আপনি যা বোঝেন তা তো আছে ক্যলেণ্ডার আর বাঁধাই ফটো বা মন্দিরে ইট কাঠের মূর্তটিতে সেখানে আপনি কোথায় দেখেছেন যে মা লক্ষ্মী খড়ম পরে বসে আছেন? আর তিনি ধনের দেবী হয়ে আপনার থার্ড ক্লাস তামার উপর সস্তা সিটি গোল্ডের হাপ ইঞ্চি খড়মের লোভে আপনার উপর প্রসন্ন হতে যাবেন! পারেন আপনারা কুবেরের চাবিকাঠি গলায় ঝুলিয়ে রাখেন কুবেরের সিন্দুক কোথায় জানেন না! আপনার প্রচেষ্টা না থাকলে কোন কিছুই আপনি পাবেন না। আপনাকে ইচ্ছা, জ্ঞান, কর্ম সহায় করেই আপনার প্রতিটি কর্ম সফল হবে। পৃথিবীর বস্তু যা ছিল তা থাকবে আপনি এসেছেন, খেলা করবেন, খালি হাতে চলে যাবেন। কিন্তু শিকার হবেন কেন? আপনার যুক্তি বুদ্ধি সাধারণ জ্ঞান এই সব গুলিকে জলাঞ্জলি দিয়ে কেন আপনি ধর্ম ভ্রষ্ট হবেন। অন্ধ বিশ্বাসের বলি হয়ে আপনার কষ্টার্জিত পুরুষার্থ কে প্রতারকদের হাতে তুলে দেবেন কেন?

আপনি বলতে পারেন তাহলে ঐ সব প্রতিষ্ঠিত অভিনেতারা যে বলেন তারা ঐ সব জিনিস পরেই আজ এত বড় হয়েছেন তারা কি সবাই মিথ্যা বলে! না তারা মিথ্যা বলেন না তারা অভিনয় করেন। বিনিময়ে মোটা টাকা পান। আর বাকী যারা বলেন তারা সকলেই ওই লোক ঠকানো ব্যবসার সাথে জড়িত। আপনার মনে ওই সব জিনিসের প্রতি বিশ্বাস এনে দিতে পারলে আখেরে লাভ তাদের।

জানি আপনি বুদ্ধিমান। অন্তত নিজের বৌ-ছেলের কাছে তাই সেজে থাকেন। তাহলে এই সব পরা ছাড়ুন নিজের ইচ্ছা-জ্ঞান-কর্ম কে সুনিয়ন্ত্রিত করুন দেখবেন স্বয়ং ভগবান আপনার জন্য সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে এসেছে।

সকলের ভালো হোক, সকলেই সুখে থাকুক, ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাস থাকুক, নশ্বর কোন বস্তুতে নয়।

-ঐরাবত

Saturday, February 07, 2015

তুমি কে?

তুমি কে? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের অনেকের জানা নেই। তাই আমরা সহজেই উত্তর দিই আমি অমুক শর্মা বা তমুক সেখ। এইগুলি এক একটা নাম। এই নাম গুলির একটা অর্থ হয়। কিন্তু সেই নামের অর্থের সাথে আমার চরিত্রগত মিল থাকতেও পারে অথবা নাও থাকতে পারে। যাকে বলা যায় কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন। তাহলে নাম আমার যথার্থ স্বরূপ নয়। তাহলে আমার যথার্থ স্বরূপ কি? দেহ তো একটা চেয়ারের মত। যার মধ্যে বসে আমার চেতনা আমার জীবন পরিচালিত করে। আমার চেতনাই কি তাহলে আমি? অনেকটা সেই রকম হলেও চেতনাই আমি নয়। কারণ যখন আমি ঘুমিয়ে থাকি তখন আমার সাথে আমার চেতনাও ঘুমিয়ে থাকে। তাই বলে কি আমি তখন নেই! আছি নাহলে প্রত্যূষে শয্যা ত্যাগ করেই আবার জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি কিভাবে? আমার হৃদয়ের স্পন্দন, আমার রক্তের চলাচল, আমার হরমোন গ্রন্থি গুলির ক্ষরণ, আমার দেহকোষ গুলির বৃদ্ধি ইত্যাদি আমার চেতনার অগোচরেই হয়ে থাকে। তাহলে বোঝা যায় চেতনাকেও পরিচালিত করে এমন একজন যে আমার দেহের মধ্যেই অবস্থিত হয়ে আমার সর্বস্ব কিছুকে পরিচালিত করে – কিন্তু সে থাকে সাধারণ ভাবে আমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সেই হল আসল আমি। তাকেই ধর্ম শাস্ত্রে বলা হয়েছে আত্মা। আত্মা অবিনাশী, মহা শক্তিধর, নিষ্কলুষ এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সাথে একই যোগসূত্রে গ্রথিত। আত্মা কোনও খণ্ড চেতনা নয়। আত্মা বিশ্ব চেতনা। এই সমগ্র বিশ্বে তুমি-আমি-সে ইত্যাদির মত আত্মা কোন খণ্ডিত অংশ নয়। সে সদা পূর্ণ এবং পূর্ণ হতে পূর্ণ বিয়োগেও সে সদা পূর্ণ থাকে। বিয়োগ বলতে এখানে আমি বাদ বোঝাতে চাইছি না। বিয়োগ বলতে বিযুক্ত বা যা যুক্ত নয় তাই বোঝাতে চাইছি। উদাহরণ স্বরূপ ধরা যেতে পারে সমুদ্রের ধারে গিয়ে তুমি সমুদ্র থেকে এক ঘটী জল নিলে দেখতে পাবে ঘটির জলে আর ঢেউ উঠছে না। কিন্তু তোমার সামনের আদিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র রাশির সাথে তোমার ঘটির জলের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আবার তোমার ঘটির জল সমুদ্রে নিক্ষেপ করে দিলে দেখবে সেই জলে আর কোণ প্রভেদ নেই এবং পুনরায় সেই সমুদায় জল তরঙ্গায়িত। এখানে আমি যে ভূমিকাটি গ্রহণ করেছি তা হল বিযুক্ত। এই রকমই আমি সেই মহা চেতনা থেকে নিজেকে বিযুক্ত করে রাখি। তার ফলে আমার প্রকৃত স্বরূপ আমার কাছে অজানা। তাই আমি জানি না আমি কে? তাই চুপ করে যাই যখন কেউ জিজ্ঞেস করে তুমি কে?

Friday, November 28, 2014

কিছু কথা

আমাদের মনে তন্ত্র সম্বন্ধে অনেক সংস্কার জমা হয়ে আছে যা আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গী কে স্বচ্ছ হতে দেয় না। আর আমরা তন্ত্র সম্বন্ধে কিছু মন গড়া কাল্পনিক চিন্তা ভাবনা কে এমন ভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করি যে তা আমাদের কাছে সত্য বলে প্রতিভাত হতে থাকে। এক জন তান্ত্রিকের সর্ব প্রথম কর্তব্য হল নিজের দৃষ্টি ভঙ্গী কে স্বচ্ছ করা, মনকে সব রকম সংস্কার থেকে মুক্ত করা।

কারণ তন্ত্র কোন আর্য সভ্যতার দান নয়। গুহা মানব যখন আগুনের ব্যবহার শুরু করে সভ্যতার প্রথম সোপানে তার পা রেখেছিল তন্ত্র বিদ্যা তখন থেকেই তার সাথে পা ফেলা শুরু করেছিল। আমাদের বহু প্রাচীন জ্ঞান-ধারনা এবং বিশ্বাস এই তন্ত্রের মাধ্যমেই সুরক্ষিত রয়ে গিয়েছিল বলেই আর্য সভ্যতা একটা বিশেষ আঙ্গিক পেয়ে প্রগতির চরম উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে আজ এত জনপ্রিয়। অনেকের মনে ধারনা আছে তন্ত্র বেদ থেকে বিশেষ করে অথর্ব বেদ থেকে নিষ্কাশিত হয়ে এসেছে। আমি এই মতে বিশ্বাসী নই কারণ তন্ত্র বেদের থেকে সম্পূর্ণ একটি অন্য ধারা, আর্য সমাজের জীবন চর্যার সাথে তন্ত্রের রীতি নীতি ইত্যাদির কিছু মিল পাওয়া যায় না। বরঞ্চ এটা বলা যায় যে তন্ত্রের সাথে মিশে গিয়ে বৈদিক সভ্যতা তার নিজস্ব পথ থেকে সরে এসে এমন একটা রূপ গ্রহণ করে যা জম্বু দ্বীপের মানুষদের কাছে গ্রহণ যোগ্য হয়।

তন্ত্রের মুল উদ্দেশ্য মানুষের হিত সাধন এবং কেবল মাত্র হিত সাধন। মানবতার যে দিকটি তন্ত্র সকল সময়ে খেয়াল রেখে চলে তা হল সাম্যবাদ। তন্ত্রে প্রত্যেকের সমানাধিকার আছে। কারণ তন্ত্র শিক্ষার কেবল মাত্র একটি মাত্র যোগ্যতা প্রয়োজন হয় তা হল মানব দেহ। মানব আকৃতি এই জন্যই দেবতা, পিশাচ(?) নাগ, গন্ধর্ব, দৈত্য, বানর ইত্যাদি বৈদিক যুগের যে সমস্ত মানব জাতি পরিলক্ষিত হত সকল জাতির মধ্যে তন্ত্র সাধনা লক্ষ্য করা যেতো। তন্ত্রের একমাত্র আরাধ্য দেবতা হলেন পশুপতি শিব। এই জন্যই আমরা আর্য সভ্যতা ভারত ভূমিতে প্রবেশ করবার বহু আগে থেকেই সিন্ধু সভ্যতা ইত্যাদিতে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ স্বরূপ মূর্তি ইত্যাদি পেয়েছি। তাকে মহেশ্বর এই জন্যই বলা হয়ে থাকে যে ঈশ্বরের ধারনা গঠন করার আগে থেকেই তার অর্চনা সমগ্র বিশ্ব বাসী সেই অনাদি কাল থেকে করে আসছে।

কালপুরুষ নামে যে নক্ষত্র মণ্ডলী আকাশের মাঝে ধনুর্বাণ হাতে শিকারই রূপ গ্রহণ করে আছে সেই হল তার আদি রূপ। সেই অরূপ যখন প্রথম রূপ পরি গ্রহণ করেন তখন তিনি ওই কাল পুরুষ রূপেই প্রথম প্রকাশিত হন, এবং তার পায়ের কাছে যে কুকুর বসে আছে লুব্ধক নামে তিনিই ধর্ম। আমরা তাই আমাদের বৈদিক গ্রন্থ গুলিতে দেখতে পাই ধর্ম দেবতা কে কুকুরের রূপ পরিগ্রহ করতে।

যখন আমরা কোণ জাতি গঠন করিনি তার আগে থেকেই তন্ত্র আমাদের সাথে থাকার জন্যই তন্ত্রে কোন জাতের বিচার নেই এবং জ্ঞান মূলক এই ধর্মে কোন জাতি বিচার প্রয়োজন হয় না। যেটুকু প্রয়োজন হয় তা মানব শরীরের বিচিত্রতার জন্য। এই জন্যই তন্ত্রে জাতি বিচার নেই আছে প্রকৃতি বিচার। জ্ঞান হীন প্রত্যেক মানব দেহই হল পশু দেহ আর এই দেহের কর্তা পশুপতি।

আর আমাদের মন, প্রবৃত্তি সব কিছুই হল একটি পক্রিয়া, যার গতি মানতা এবং কারণ সম্বন্ধ তাকে বিভিন্ন ভাবে ব্যখাত করে থাকে। তন্ত্র কে বুঝতে হলে অনুভব প্রয়োজন। আর সঠিক অনুভবের জন্য মন কে পরিষ্কার রাখা আরও বেশী প্রয়োজন। চিমটাতে করে অঙ্গার তুললে যেমন আমরা তার তাপ অনুভব করতে পারি না , সংস্কার মুক্ত মন ছাড়া তেমনি তন্ত্র কে কোন দিন অনুভব করা যাবে না।

কারণ আমরা ছোট বেলা থেকেই অনেক কথা শুনে শুনেই বিশ্বাস করে নিয়ে থাকি, সেই কথা গুলিকে ত্যাগ না করলে মিথ্যার অতল সাগরে থেকে কিভাবে আমরা এই সর্ব জন গ্রাহ্য লোক মঙ্গলকারী স্বয়ং শিব হতে আগত এই মহা জ্ঞান গঙ্গা তে স্নান করতে পারবো। তবে হ্রদয়ে যদি চেষ্টা থাকে তাহলে সমগ্র শরীর সেই রাস্তা খুঁজে পাওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে থাকে। সামান্য তম চেষ্টা তেই তখন সাফল্য এসে যায়। এর জন্য চোখ বুজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার প্রয়োজন অনেক সময় পড়ে না। মানুষ চাঁদে যাওয়ার কথা ভেবেছিল বলেই আজকে সে চাঁদে চাষবাস করার কথাও ভাবছে। আমাদের সেই চেষ্টা টুকু করতেই হবে। না হলে মূর্তি আর উপাসনা ঘরে পৃথিবী ভর্তি হয়ে গেলেও ধর্মের এক পা হাঁটাও হবে না। তন্ত্র ই এক মাত্র এমন ধর্ম যার জন্য মানুষের কোন মূর্তি বা উপাসনার প্রয়োজন নেই, প্রকৃতির বিস্তৃত চারণ ভূমিই তান্ত্রিকের মন্দির, প্রকৃতির একটি অণু ই তার চিন্ময় মূর্তি।

Saturday, August 09, 2014

ভক্তি কি?

lord_shivas_family

বিজ্ঞান হচ্ছে পরমতত্ত্ব। বিজ্ঞান হল সেই জ্ঞান যে জ্ঞানের উদয় হলে ‘আমি ব্রহ্ম’ এরূপ বিশ্বাসে মন দৃঢ় হয়। ব্রহ্ম ছাড়া আর অন্য কোন বস্তুর কথা মনেও আসে না এবং সেই বিজ্ঞানী মানুষের বুদ্ধি সর্বতোভাবে শুদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সেই বিজ্ঞান দুর্লভ। জগতে সেই শুদ্ধ জ্ঞানের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ কম। সেই বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানী যা এবং যেমন তা সর্বদাই শিব স্বরূপ সাক্ষাত পরাৎপর ব্রহ্ম।

কিন্তু সেই বিজ্ঞান লাভের পথ হল বিশুদ্ধ শিব ভক্তি। এই ভক্তিই হল ওই বিজ্ঞানের মাতৃ স্বরূপ যা ভোগ ও মোক্ষ রূপ ফল প্রদানকারী। আর বাবা মহাদেবের কৃপাতেই মানুষ সেই ভক্তি লাভ করতে পারে। ভক্তি ও জ্ঞানে কোন কোনও পার্থক্য নেই। ভক্ত ও জ্ঞানী উভয়েই সর্বদা সুখদায়ক হয়ে থাকেন। যিনি ভক্তির বিরোধী তাঁর জ্ঞান লাভ হয় না।

“ভক্তৌ জ্ঞানে ন ভেদো হি তৎকর্তুঃ সর্বদা সুখম্‌ ।

বিজ্ঞানং ন ভবত্যেব সতি ভক্তি বিরোধিনঃ ।।

ভক্তাধীনঃ সদাহং বৈ তৎ প্রভাবাদ্‌ গৃহেষ্বপি।

নীচানং জাতিহীনানাং যামি দেবি ন সংশয়ঃ ।।”(শিবপুরাণ রুদ্রসংহিতা)

মহাদেব মহেশ্বর সর্বদা ভক্তের অধীন থাকেন এবং ভক্তির প্রভাবে জাতি হীন নীচ মানুষদের গৃহেও তিনি অবস্থান করেন। গুণ ভেদে ভক্তি দুই রকম – সগুণা এবং নির্গুণা। যে ভক্তি শাস্ত্রবিধি দ্বারা প্রেরিত বা বৈধী অথবা হৃদয়ের সহজ অনুরাগ দ্বারা প্রেরিত বা স্বাভাবিক সেই ভক্তিই উচ্চকোটির ভক্তি। এছাড়া যে কামনামূলক ভক্তি হয়ে থাকে তা নিম্নকোটির ভক্তি। সগুণ এবং নির্গুণ ভক্তি আবার নৈষ্ঠিকী ও অনৈষ্ঠকী ভেদে দুই ভাগে বিভক্ত। নৈষ্ঠিকী ভক্তি ছয় প্রকারের এবং অনৈষ্ঠকী ভক্তি একই প্রকারের হয়। প্রকৃত বিদ্বান ব্যক্তি বিহিতা এবং অবিহিতা ভেদে নানা প্রকারের বলে মনে করে থাকেন। সগুণা এবং নির্গুণা উভয় ভক্তির নয়টি অঙ্গ।

“শ্রবণং কীর্তনং চৈব স্মরণং সেবনং তথা।

দাস্য তথার্চনং দেবি বন্দনং মম সর্বদা।।

সখ্যমাত্মার্পণং চেতি নবাঙ্গানি বিদুর্বুধাঃ।”- শিবপুরাণ রুদ্রসংহিতা

শ্রবণ, কীর্তন, স্মরণ, সেবন, দাস্য, অর্চন, সর্বদা শিব বন্দনা, সখ্য এবং আত্মসমর্পণ। এছাড়াও ভক্তির বিভিন্ন উপাঙ্গও রয়েছে।

যে ব্যক্তি স্থির হয়ে সমগ্র মনকে শিবকেন্দ্রিক করে আসনে উপবেশন করে শরীর ও মনের দ্বারা শিবকথা শিব কীর্তনে শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করে প্রসণ্ণতাপূর্বক সেই অমৃত সমান কথা-কীর্তন রস পান করেন তার সেই সাধনাকে বলা হয়ে থাকে শ্রবণ।

যিনি তার হৃদাকাশে মহাদেব মহেশ্বরের দিব্য জন্ম-কর্ম-লীলা চিন্তা করে প্রেমভরে তা উদাত্তকণ্ঠে গীত করেন তার এই ভজন সাধনকে বলা হয় কীর্তন।

নিত্য মহাদেব পরমপুরুষ তৎপুরুষ মহেশ্বরকে সর্বদা ও সর্বত্র ব্যাপক (সকল বস্তুর মধ্যেই তিনি বিদ্যমান) জেনে যিনি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে সব সময়ে নির্ভয়ে থাকেন তার সেই ভক্তিকে বলা হয়ে থাকে স্মরণ।

অরুণোদয় থেকে শুরু করে সব সময়ে প্রভুর কৃপাকে বা তার অনুকূলতাকে মনে রেখে মন-বুদ্ধি-চিত্ত-হৃদয় এবং ইন্দ্রিয়াদির দ্বারা নিরন্তর মহেশ্বরের সেবা করা হয় তাকেই সেবন নামক ভক্তি বলা হয়।

নিজেকে প্রভুর সেবক মনে করে অন্তর থেকে সর্বদা প্রভূ ভোলানাথের প্রিয় সম্পাদন করাকে দাস্য বলা হয়।

নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী শাস্ত্রীয় বিধি দ্বারা পরমাত্মারূপী আমাকে সর্বদা পাদ্য-অর্ঘ্য ইত্যাদি ষোড়শোপচারে বা পুষ্প-গন্ধ ইত্যাদি পঞ্চোপচারে পূজন করাকেই অর্চন বলা হয়ে থাকে।

অন্তরে ধ্যান ও বাক্য দ্বারা স্তোত্র বন্দনামূলক মন্ত্রাদির পাঠ করতে করতে শরীরের আট অঙ্গে ভূমি স্পর্শ করে ইষ্টদেবকে নমস্কার করাকে বলা হয় বন্দন।

প্রাণেশ্বর মহাদেব মহেশ্বর মঙ্গল-অমঙ্গল যা কিছুই সংঘটিত করেন না কেন তা ভক্তের মঙ্গল সাধনের জন্য অন্তরের এই রকম দৃঢ় ভক্তিকে বলা হয়ে থাকে সখ্য।

দেহ ইত্যাদি যা কিছু বস্তু নিজের বলে মনে করা হয়, সেই সমস্ত কিছু ভগবানের প্রসন্নতার জন্য তাকে সর্ব সমর্পণ করে নিজের জন্য কিছুই না রাখাকে এমনকি শরীর নির্বাহের চিন্তা রহিত হওয়াকে বলে আত্মসমর্পণ।

শিবশক্তির এই হল নয়টি অঙ্গ। এই গুলি ভোগ ও মোক্ষ প্রদানকারী। এর দ্বারা জ্ঞান প্রকাশিত হয় এবং ভক্ত বিজ্ঞানী হয়ে ওঠে।

Sunday, August 03, 2014

প্রথমতঃ

তন্ত্রকে বুঝিতে হইলে প্রথমে বুঝিতে হয় তন্ত্রের জনক কে। তন্ত্রের জনক হইলেন দেবাদিদেব মহাদেব। তার শ্রী মুখ হইতেই তন্ত্র আগত হইয়াছে। তাই তন্ত্রকে আগম বলা হইয়া থাকে। মহাদেব বলিতে আমরা কি বুঝি? কোন দেবতা বিশেষ, কোন পরম পুরুষ বিশেষ অথবা চিত্রে বর্নিত সুন্দর মুখশোভা যুক্ত প্রেমময় ঠাকুর ইত্যাদি ইত্যাদি। ইহা কি সত্য?

ইহা সত্য নহে। যেহেতু আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা প্রভাবিত হইয়াই আমরা জগৎ কে আপন আপন রুচি অনুযায়ী অনুভব করিয়ে থাকি ইহাও ওই এক প্রকার অনুভূতি বিশেষ। তিনি প্রথমত নিরাকার। যাহার কোন আকার নাই প্রকার নাই। তাহলে তাহাকে জানিব কি প্রকারে চিনিব কি প্রকারে? ইহার একমাত্র পথ হইল সমর্পন। নিজের কিছুমাত্র অবশিষ্ট না রাখিয়া আপনাকে তাহার শ্রী চরণে নিবেদন করিয়া দিলে তাহার কৃপা বর্ষিত হইয়া থাকে। এবং তাহার কৃপা ব্যাতীত তাহকে অনুভূতিগ্রাহ্য করা কদাপি সম্ভব পর নহে।

দ্বিতীয়ত তিনি নির্গুন। আমরা বস্তু বা ব্যক্তি সতন্ত্রতা তাহার গুন অথবা ধর্ম অনুযায়ী নিরুপন করিয়া থাকি। কিন্তু তিনি নির্গুন হইবার ফলে তাহাকে আমরা চিনিব কি ভাবে? জানিব কি ভাবে তিনি বস্তু না ব্যাক্তি? ইহার জন্য প্রয়োজন বীজ। তিনি অব্যক্ত হইয়াও ব্যক্ত হইয়াছেন। সেই বীজ মন্ত্র জপের মাধ্যমে তাহাকে আমরা বুঝিতে পারিব। চিনিয়া লইতে পারিব তাহার স্বরূপ। কারন বীজ গুলি আসিয়াছে জ্যমিতিক চিত্র হইতে। ক্ষর বিশ্ব ভুবনে অক্ষর স্বরূপ তিনি বীজের মাধ্যমে প্রকাশিত। সুতা বাহিয়া যেমন ঘুড়ির কাছে যাওয়া যায় এবং সেইখান হিইতে আকাশ সম্বন্ধেও একটা সম্যক ধারণা করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে সেই রকম বীজ মন্ত্র জপের মাধ্যমে তাহার আভাস মাত্র বুঝিতে পারা যায়।

বীজ মন্ত্র পাইব কোথা? ইহার একমাত্র উপায় সদগুরু। এইখানেই থামিয়া যাইতে হয়। বর্তমান কালে গুরু পদ বাচ্য ব্যাক্তির বহু সন্ধান পাওয়া যায় কিন্তু যথার্থ গুরু পাইবার সম্ভাবনা অতি ক্ষীন। সুতারং উপায়? মহাদেব বলিতে আপনি যাহা বুঝেন তাহার চরন তলে সমস্ত কিছু সমর্পন করিয়া তাহার কৃপা প্রার্থনা ছাড়া অন্য পথ নাই বলিলেই বলিতে পারেন। তাহার কৃপায় যদি আপনার সদ গুরু লাভ হইয়া থাকে। তিনি যদি কৃপা পরবশ হইয়া আপনাকে বীজমন্ত্র প্রদান করিয়া থাকে। জীবন এবং জগত সম্বন্ধে যথার্থ জ্ঞান দানের উদ্দেশ্যে যদি আপনাকে দিব্যচক্ষু দান করিয়া থাকেন তবেই আপনি তাহাকে জানিতে চিনিতে না পারিলেও কিছুটা বুঝিতে পারিবেন। তাহার পরে তো আসে তন্ত্র সাধনার কথা, তন্ত্র অভ্যাসের কথা। আর যদি পড়িয়া বুঝিয়া লহিতে পারেন তাহলে তো আপনি স্বংয় সেই মহাদেব। আর লোক ঠকাইবার জন্য ভেষজ বা দ্রব্য ব্যাবহার তো বিজ্ঞান বলিয়াই গন্য হইতে পারে। যেই বিজ্ঞান ব্যাবহার করিয়া আপনি মোবাইল তৈরী করিয়াছেন। ইহা তন্ত্র নহে তন্ত্রের আচার মাত্র। তন্ত্র এই সব হইতে বহু উর্ধে অবস্থিত। যেই খানে পৌঁছে যাইতে পারিলে আর পতন নাই, ভোগ নাই, যোগ নাই, উহাই মহা নির্বান। আর নির্বানের জন্য এক জন্মই যথেষ্ট।

মৃত্যুর পর কি আছে তাহা কে আর দেখিয়া আসিয়া বলিয়াছে। নব কলেবর সর্বদা নব কলেবর হিসাবেই বিবেচিত হইয়া থাকে তাহা নহে কি?

Wednesday, December 25, 2013

Circulation



শবাসন




শবাসন যোগশাস্ত্রে বর্ণিত আসন বিশেষ।  শবের (মৃতদেহ) ভঙ্গিমায় এই  আসন করা হয় শবলেএর এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
পদ্ধতি
১. দুই হাত শরীরের দুই পাশে মেলে রেখে সটান চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এই সময় হাতের তালু থাকবে উপরের দিকে এবং একটু বাইরের দিকে হেলানো থাকবে।
২. পা দুটোর মাঝে কিছুটা ফাঁক রাখুন। এই সময় পায়ের পাতা বাইরের দিকে একটু হেলে থাকবে।
৩. সমস্ত শরীরকে শয়ন তলের উপর ছেড়ে দিন। 
৪. খুব ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে থাকুন। এবার মনকে সমস্ত চিন্তামূক্ত করুন এবং শরীরকে শিথিল করে দিন। তাতে প্রথমে শরীরটাকে ভার মনে হবে। পরে শরীরের উপস্থিতিকে ভুলে যাবার চেষ্টা করতে হবে। ফলে একসময় পুরো শরীরকে হাল্কা মনে হবে। মূলত এই  
আসনটি সহজ। কারণ এর দৈহিক  ভঙ্গিমা অত্যন্ত সহজ। আবার এটি সবচেয়ে কঠিনও বটে। কারণমনকে সংযত করেশরীরকে অগ্রাহ্য করেচিন্তাশূন্য অবস্থায় অবস্থান করাটা অতটা সহজ ব্যাপার নয়।
মূলত এই  আসনটি করা হয়অন্য আসনের শেষে বিশ্রাম করার জন্য। এক্ষেত্রে একটি  আসন যতক্ষণ করবেনঠিক ততক্ষণই শবাসন থাকবেন। অন্য 
আসন ছাড়াও শারীরীক ও মানসিক বিশ্রামের জন্য শুধু শবাসন করতে পারেন।  
উপকারিতা
১. উচ্চ-রক্তচাপের রোগীরা এই  আসনটি থেকে বিশেষ উপকৃত হবেন।
২. দীর্ঘক্ষণ শারীরীক বা মানসিক পরিশ্রমের পর শরীর অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লেএই  আসন দ্বারা শারীরীক ও মানসিক শক্তি পুনরুদ্ধার  সম্ভব হয়।
৩. স্নায়বিক দুর্বলতাঅনিদ্রাঅবসাদ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই  আসন অত্যন্ত  ফলপ্রসু ফলাফল প্রদান করে থাকে।

পদ্মাসন


পদ্মাসন যোগশাস্ত্রে বর্ণিত আসন বিশেষ। এই আসনে পায়ের বিন্যাস পদ্মফুলের পাপড়ির মতো বিকশিত অবস্থায় স্থাপিত হয় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে পদ্মাসন (পদ্ম + আসন)। এই আসনের কিছুটা পরিবর্তন করে বা অন্যান্য আসনের সাথে যুক্ত করেএর বিভিন্ন প্রকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এই দুইটি শ্রেণী বিবেচনায় যে সকল পদ্মাসন পাওয়া যায়সেগুলো হলো
বর্ধিত পদ্মাসন ও মিশ্র আসন : 
অধমুখ পদ্মাসন, অর্ধবদ্ধ-পদ্মাসন, উত্থিত পদ্মাসনঊর্ধ্বমুখ পদ্মাসন, করণ্ডাসন,
গর্বাসনপদ্ম-ভুজপীড়াসন, তোলাসন, পরিবৃত্ত পদ্মাসন (বদ্ধ-পদ্মাসন), পর্বতাসন স্বস্তিকাসন।অন্য আসনের সাথে যুক্ত পদ্মাসন : অর্ধবদ্ধপদ্ম-পশ্চিমোত্তানাসন, অর্ধবদ্ধপদ্ম-পশ্চিমোত্তানাসন, অর্ধবদ্ধপদ্ম-ময়ূরাসনঊর্ধ্ব-পদ্মশীর্ষাসনপদ্ম-ময়ূরাসনপিণ্ডাসন।
 

পদ্ধতি
১. প্রথমে দুই পা লম্বা করে সামনের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে কোন সমতল স্থানে বসুন। 
২. এবার ডান পা টেনে এনে বাম পায়ের উপর এমনভাবে স্থাপন করুনযেনো ডান পায়ের পাতা বাম উরুর কুচকি বরাবর স্থাপিত হয়। এবার বাম পা ভাঁজ করে ডান উরুর উপরে তুলে আনুন।
৩. এবার মেরুদণ্ড সোজা করে দুটো হাত সোজা করে উভয় হাঁটুর পাশে রাখুন। পায়ের পাতা আলগা করে দিন। একই সাথে হাতের আঙুলগুলো আলগা করে দিন। 
৪. শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এইভাবে ৩০ সেকেণ্ড স্থির থাকুন। তারপর পা বদল করে আসনটি আবার করুন। এরপর আসনটি শেষ করে ১ মিনিট 
শবাসনে বিশ্রাম নিন।
৫. প্রাথমিক পর্যায়ে এই আসনে থাকাটা কষ্টকর মনে হলে সময়সীমা কমিয়ে দিতে পারেন। আবার অভ্যস্থ হয়ে গেলেআসন সময় ৬০ সেকেণ্ড পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারেন।
  
উপকারিতা
১. হাটুকোমরে বাত থাকলে নিরাময় হয়।
২. পায়ের ও মেরুদণ্ডের আড়ষ্টতা দূর হয়।
৩. স্মৃতি শক্তি ও মনের একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়।
৪. অনিদ্রাজনিত অসুবিধা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


 

Nataraja


Nataraj
Nataraja

Tantrik

Tantrik
Tantrik

Yabyum

Yabyum
Yabyum