মৃৎশিলাধাতুদর্ব্বাদিমূর্ত্তাবীশ্বরবুদ্ধয়ঃ।
ক্লিশ্যন্ত স্তপসা জ্ঞানং বিনা মোক্ষং ন যান্তি
তে।।১১।
মাটি, পাথর, ধাতু ও কাঠ ইত্যাদি দ্বারা নির্মিত
ঈশ্বরের মূর্ত্তিকে ভগবান জ্ঞানে তপস্যা করে করে হাজার ক্লেশ সহ্য করলেও যদি
ব্যাক্তির তত্ত্বজ্ঞান না জন্মায় তাহলে তার মুক্তি সম্ভব হয় না।
অহো রসসমাহৃষ্টা যথেষ্টাহার-তণ্ডুলাঃ।
ব্রহ্মজ্ঞানবিহীনাশ্চেৎ নিষ্কৃতিস্তে ব্রজন্তি
কিম্।।১২।।
নানা ধরনের রস ভোগ করে হৃষ্ট, নানা ধরনের
শস্যকে আহার করে পুষ্ট দেহ লাভ করা যায় কিন্তু যারা ব্রহ্মজ্ঞান বিহীন তারা কি করে
নিষ্কৃতি লাভ করতে পারে!
বায়ুপর্ণকণাতোয়প্রাশিনো মোক্ষভাগিনঃ।
সন্তি চেৎ পন্নগা মুক্তাঃ
পশুপক্ষি-জলচরাঃ।।১৩।।
বাতাস, গাছের পাতা, শস্যকণা ও জল ইত্যাদি
দ্রব্য গ্রহণ করলেই যদি মোক্ষপ্রাপ্তির যোগ্য হওয়া যেত তাহলে পশু,পক্ষী, জলচরজীব
ইত্যাদি প্রানীগণও নিশ্চয় মুক্ত হয়ে যেত যেহেতু তারাও ওই সব জিনিস আহার হিসাবে
গ্রহণ করে থাকে।
উত্তমো ব্রহ্মসদ্ভাবো ধ্যানভাবস্তু মধ্যমঃ।
স্তুতির্জপোহধমো ভাবো বাহ্যপূজাধমাধমা।।১৪।।
জীবগণের পক্ষে একমাত্র ব্রহ্ম সদ্ভাব উত্তম।
ধ্যানভাব মধ্যম, স্তুতি-জপ ভাব ইত্যাদি অধম এবং বাহ্যপূজাভাব একেবারেই অধমের থেকেও
অধম।
যোগো জীবাত্মনোরৈকং পূজনং শিবকেশবে।
সর্ব্বং ব্রহ্মেতি বিদুষো ন যোগো ন চ পূজনম্।।১৫।।
জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার যে একতা তার উপলব্ধিই
যোগ। শিব এবং বিষ্ণুর যে উপাসনা মনে মনে অহরহ করা যায় তাইই একমাত্র পূজা। বিশ্ব
ব্রহ্মাণ্ডের দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান, আবিষ্কৃত-অনাবিষ্কৃত সকল পদার্থের মধ্যে সেই এক
ও অভিন্ন পরমব্রহ্মকে যিনি উপলব্ধি করতে পারেন তার আর যোগেরও দরকার থাকে না,
পূজারও দরকার থাকে না।
ব্রহ্মজ্ঞানং পরং জ্ঞানং যস্য চিত্তে বিরাজতে।
কিন্তস্য জপযজ্ঞাদ্যৈস্তপোভির্নিয়মব্রতৈঃ।।১৬।।
ব্রহ্মজ্ঞানই পরম জ্ঞান – যার চিত্তের মধ্যে
সর্বদাই ব্রহ্মজ্ঞান বিরাজ করে তার জপ, যজ্ঞ, তপ, ব্রতপালন ইত্যাদি নিয়মের কি
প্রয়োজন !
সত্যং বিজ্ঞানমানন্দমেকং ব্রহ্মেতি পশ্যতঃ।
স্বভাবাদ্ব্রহ্মভূতস্য কিং
পূজাধ্যনধারণাঃ।।১৭।।
সত্য, বিজ্ঞান ও আনন্দময় দৃষ্টি সহকারে যিনি
সর্বদা সর্বভূতে সেই পরমব্রহ্মকে দেখতে পান, সেই স্বভাবতঃ ব্রহ্মভাবময় ব্যাক্তির
পূজা, ধ্যান, ধরনা আর কি হতে পারে!
ন পাপং নৈব সুকৃতং ন স্বর্গো ন পুনর্ভবঃ।
নাপি ধ্যেয়ো ন বা ধ্যাতা সর্ব্বং ব্রহ্মেতি
জ্ঞানতঃ।।১৮।।
ব্রহ্ম সর্ব্বময় এই জ্ঞান যার হয়েছে তার আর পাপ-পুন্য,
স্বর্গ-নরক, ধ্যাতা-ধ্যেয় এসব কিছুই থাকে না।
অয়মাত্মা সদা মুক্তো নির্লিপ্তঃ সর্ব্ববস্তুষু।
কিন্তস্য বন্ধনং কর্ম্মান্মুক্তিমিচ্ছন্তি
দুর্ধিয়ঃ।।১৯।।
আত্মাকে ভগবান ব্যাখা করেছেন সদা মুক্ত বলে।
পদ্মপাতার উপর জল যেমন সেই পাতার উপর থেকেও তাতে লিপ্ত হয় না তেমনই আত্মা এই দেহের
মধ্যে থেকেও সংসারের কোন বস্তুতেই লিপ্ত হয় না। তাহলে কেন মূর্খের মত এই আত্মার
মুক্তি লাভের জন্য কোন বন্ধন থেকে তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হয়, সে তো সদামুক্ত
তার আবার বন্ধন কি!
স্বমায়ারচিতং বিশ্বমবিতর্কং সুরৈরপি।
স্বয়ং বিরাজতে তত্র
পরমাত্মাহ্যপ্রবিষ্টবৎ।।২০।।
পরমাত্মা নিজের মায়া দ্বারা সৃষ্ট এই বিশ্বসংসারে
নিজে প্রবেশ না করেই প্রবেশিত ভাবে বিরাজ করছেন –দেবতারাও এই বিষয়ে কোন বিতর্কের
অবকাশ রাখেন না।(continue..)
চমৎকার
ReplyDeleteএটি কোন গ্রন্থের থেকে নেওয়া
দয়া করে জানাবেন।