কৈলাস শিখরে পদ্মাসনে বসে আছেন দেবতাদের দেবতা, জগতের
গুরু মহাদেব। মহাদেব তাকে জিজ্ঞেস করলেন, - হে মহান ঈশ্বর, জ্ঞান কাকে বলে? আমাকে
বলুন। কি ভাবে এই সৃষ্টির উদ্ভব হল? কি ভাবেই বা এর বিনাশ হয়ে থাকে? সেই ব্রহ্মজ্ঞানই
বা কি যা এই সৃষ্টি সংহার বর্জিত?
ঈশ্বর বললেন- একমাত্র অব্যক্ত (যা বাক দ্বারা প্রকাশ
করা যায় না) হতেই সৃষ্টি হয় এবং সেই অব্যক্তের মধ্যেই সব লীন হয়। সৃষ্টি-সংহার হীন
যে ব্রহ্ম জ্ঞানের কথা বলছ তা ওই অব্যক্তই। ওঁ কার থেকেই চৌদ্দটি বিদ্যা, মন্ত্র,
পূজা, তপ:, ধ্যান, কর্ম, অকর্ম ইত্যাদি সমস্ত কিছু নির্গত হয়েছে। চারটি বেদ, ছয়টি
বেদাঙ্গ, মীমাংসা, ন্যায়, ধর্মশাস্ত্র, পুরাণ এই চৌদ্দটিকেই চতুর্দশ বিদ্যা বলা
হয়ে থাকে। এই চৌদ্দটি বিদ্যাকে সম্পূর্ণভাবে করায়ত্ত করতে পারলেই জ্ঞান লাভ হয়।
এবং এই জ্ঞান লাভ হলেই ব্রহ্ম জ্ঞানে অধিকার জন্মায়। আর ব্রহ্ম জ্ঞান যার হয় তার
সকল বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান হয়।
বেদ-পুরাণ ইত্যাদি শাস্ত্রগুলিকে নগর বধূর (পতিতা) মত
সকলের কাছেই প্রকাশ করা যায় কিন্তু শাম্ভবী
বিদ্যা অভ্যন্তরীণ বিদ্যা এবং কুল বধূর তুল্য সদা অপ্রকাশ্য (দেখানো চলে না বা
দেখানো যায় না)। দেহের মধ্যেই সমস্ত বিদ্যা থাকে, দেহের মধ্যেই সকল দেবতারা স্থিত
থাকেন, দেহের মধ্যেই সকল তীর্থের অবস্থান এবং গুরু আশীর্বাদে তা প্রত্যক্ষ করা
সম্ভব, অনুভব করা সম্ভব। আধ্যাত্মবিদ্যা মানুষকে সুখ ও মোক্ষ প্রদানকারী বিদ্যা
এবং এই বিদ্যা লাভ করলে ধর্ম, কর্ম, জপ ইত্যাদির নিবৃত্তি হয়ে থাকে। কাঠের মধ্যে
যেভাবে আগুন থাকে, ফুলের মধ্যে যেভাবে গন্ধ থাকে এবং জলের মধ্যে যেভাবে অমৃত সকল
সময়ই বিদ্যমান থাকে দেহের মধ্যে সেইভাবেই দেবতা পাপ-পুণ্য বিবর্জিত হয়ে সদা
উপস্থিত থাকেন। (১-১০)
দেহের মধ্যে তিনটি নাড়ী
থাকে। (তিন প্রকার) তার মধ্যে ঈড়া হল ভগবতী (যে ভগ বহন করে) গঙ্গা, পিঙ্গলা হল
যমুনা নদী এবং সুষুণ্মা হল সরস্বতী নদী। (এখানে ঈড়া হল ধমনী যার মধ্যে শুদ্ধ শোণিত
প্রবাহিত হয়, পিঙ্গলা হল শিরা যার মধ্যে দূষিত রক্ত বাহিত হয় পুনরায় শুদ্ধি করণের
জন্য এবং সুষুণ্মা হল স্নায়ু তন্ত্র যার মাধ্যমে আমাদের উত্তেজনা (impulse)প্রবাহিত হয় যা অনুভূতির উদ্ভব ঘটায়, জ্ঞান হিসাবে
সঞ্চিত থাকে বা বাক হিসাবে প্রকাশিত হয়ে যুগ যুগান্ত প্রবাহিত হয় তাই একে বলা
হয়েছে সরস্বতী।)
যেখানে এই তিনটি নদী
মিলিত হয় তাকে বলা হয় ত্রিবেণী সংগম, যা সমস্ত তীর্থের শ্রেষ্ঠ, তেমনি এই তিন
প্রকার নাড়ী যেখানে মিলিত হয় তাকেও ত্রিবেণী বলা হয়ে থাকে। ত্রিবেণী সংগমে স্নান
বা অবগাহন করতে পারলে যেমন সকল প্রকার পাপ দূর হয়ে থাকে তেমনি শরীর অভ্যন্তরস্থ ত্রিবেণী
সংগমে অবগাহন করতে পারলে মনের অন্ধকার দূর হয়ে মানুষ শুদ্ধ চৈতন্যের অধিকারী হয়।
(এই জন্যই কি বলে- ‘ডুব দেরে মা কালী বলে’। শরীর অভ্যন্তরস্থ ত্রিবেণী সংগম হল
মানস লোক বা মন, স্নান অর্থে অবগাহন অর্থাৎ মনকে বিশেষ ভাবে জানতে পারলেই অজ্ঞানতা
বা পাপ বিদূরিত হয়।)
দেবী জিজ্ঞেস করলেন-
খেচরী মুদ্রা কি প্রকার? শাম্ভবী বিদ্যা কি? আধ্যাত্মবিদ্যাই বা কি হে মহেশ্বর তা
আমাকে বলুন।
মহাদেব বললেন- বিনা
অবলম্বনে যখন মন স্থির থাকে (মন সর্বদাই মনন করে থাকে, অর্থাৎ কিছু না কিছু চিন্তা
তরঙ্গ উৎপন্ন করেই চলে এবং তার জন্য মনের প্রয়োজন হয় বিষয়ের অবলম্বন কিন্তু মন যখন
বিষয় চিন্তা পরিত্যাগ করে তখন তার তরঙ্গ বা আন্দোলন বন্ধ হয় এবং তখনই মন স্থির
হয়েছে বলে ধরা সঠিক), বিনা প্রতিরোধে যখন বায়ু স্থির থাকে (বায়ু বলতে এখানে শরীর
অভ্যন্তরস্থ বায়ু সমূহের কথা বলা হয়েছে। প্রাণায়ামের সঠিক অভ্যাসে যখন আর মুদ্রা
সহযোগে আঙুলের সাহায্যে নাসিকা নিরুদ্ধ করে বায়ুর গতিকে সমাহিত করার প্রয়োজন হয় না
তখন বায়ু সকলকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় আর মন স্থির হলেই এটা সম্ভব বা
এটা হলেই মন স্থির হয়ে থাকে)এবং দৃষ্টি যখন বিনা অবলোকনেই স্থির করা যায় তখন সেই টিকে
খেচরী মুদ্রা বলা হয়ে থাকে।
বালক ও মূর্খের চেতনা
যেমন স্বপ্ন হীন হয়েও নিদ্রিত হতে পারে সেই রকম যে বিদ্যা দ্বারা কোন অবলম্বন
ছাড়াই আধ্যাত্মপথে অগ্রসর হওয়া যায় তাকেই শাম্ভবী বিদ্যা বলে।
দেবী
তখন বললেন- হে দেবতাদের দেবতা, জগতের প্রভু জগন্নাথ পরমেশ্বর, কি জন্য এই দর্শন
শাস্ত্র গুলি এ রকম ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করে তা আমাকে বলুন? (খুবই স্বাভাবিক
প্রশ্ন। এক ঈশ্বরের ভজনা করার জন্য এত ভিন্ন ভিন্ন মত ও পথ কেন?) (শ্লোক ১-১৬)
আমাকে পারলে তন্ত্রের বইটা কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে তার ঠিকানা দেন। বাংলাদেশের যে খানেই হোক না কেন কোন সমস্যা নাই। যদি আপনার কাছে তন্ত্রের কিছু বই থাকে তবে তা আমাকে কিছু দিনের জন্য ধার দিতে পারেন পড়েই ফেরত দিয়ে দিব।
ReplyDeleteplease if u have any kind of information where can buy some Tantra books please email me on this mail or contact me on this number. I really need the books and searching for 8 years.
Please Please Please!
das.himalay001100@gmail.com
akash.das001100@gmail.com
+8801677595538