শিব-গীতা
প্রথম অধ্যায়
প্রথমে প্রনতি জানাই দেব নারায়ণে।
জয় দেবি সরস্বতি মতি শিব জ্ঞানে।।
কহিলেন সূত সব ঋষিগন প্রতি।
গীতা শাস্ত্র অধ্যয়ন মুক্তিদায়ী অতি।।
মহেশের অনুগ্রহে করিনু ব্যাখ্যান।
মহাদুখঃ তরিবার শিব উপাখ্যান।।
বেদকর্ম, দান, তপ যত করা যায়।
মানব কৈবল্যপদ কভু নাহি পায়।।
কৈবল্য লাভে পথ কিছু নাই আর।
একমাত্র জ্ঞানই পথ শুদ্ধ জ্ঞান সার।।
পুরাকালে দণ্ডবনে শুনিলেন রাম।
শিবমুখে গোপনীয় শিব উপাখ্যান।।
যা স্মরণে মানবের মুক্তি হয় ত্বরা।
স্কন্দ হতে শুনেছিল সনৎ কুমারেরা।।
ব্যাসদেব তাহা শুনে কুমার দ্বয় হতে।
কৃপা করি বলিলেন এই সূতপুতে।।
করি সাঙ্গ উপাখ্যান ব্যসদেব কহে।
কহিওনা তারে যে অধিকারী নহে।।
আমার বাক্যের যদি করহে অন্যথা।
দেবগণ রুষ্ট হয়ে শাপ দিবে তথা।।
অনন্তর জিজ্ঞাসিনু দেব বেদব্যাসে।
দেবগন রুষ্ট হবেন কিসের অভ্যাসে।।
কি কারনে তাহাদের হইবে কি হানি।
ক্রুদ্ধ হবে দেবগন ইচ্ছা হয় জানি।।
তাহা শুনি কহিলেন পরাশরসূত।
কারন শ্রবণ কর অতীব অদ্ভূত।।
নিত্য অগ্নিহোত্রে রত যতেক ব্রাহ্মণ।
কামধেনু রূপ মানে সর্ব দেবগণ।।
ভক্ষ্য, ভোজ্য, পেয় যা ইষ্ট পদে দান
স্বর্গে থেকে দেবগণ অগ্নি দ্বারা পান।।
ইহা ছাড়া দেবগনের অন্য পথ নাই।
অগ্নি ভুখ দেব মুখ বলা হয় তাই।।
গৃহ ছাড়ি দুগ্ধবতী অন্য কোথা গেলে।
গৃহ নিমজ্জিত হয় দুখঃ হলাহলে।।
বিপ্রগণ লভে যদি এই ব্রহ্ম জ্ঞান।
যাগ যজ্ঞ হীন হয় দেব দুখঃ পান।।
বিষয়ের বিষ ঢালি তাই দেবগণ
সদাই ব্যাস্ত রাখে মানবের মন।।
স্ত্রী-পুত্র-সংসারে মন ন্যাস্ত রয়।
জীবগনে শিব জ্ঞান কভু নাহি হয়।।
যদি বা শিব জ্ঞান কভু সমুদ্ভবে।
মধ্য পথে বিঘ্ন ফলে বিচ্ছিন্নতা লভে।।
দয়া করে যদি শিব দেন দরশন।
চিনেও না চিনে তারে অবিশ্বাসী মন।।
এতেক শুনি মুনিগন সূতেরে জিজ্ঞাসে।
পুরুষের মুক্তি সাধন হবে তবে কিসে।।
দেবগণ হন যদি তাহে অন্তরায়।
শিবজ্ঞান হবে তবে কহ কি উপায়।।
কহিলেন সূত - মুনি জানহ নিশ্চয়।
কোটি জন্ম পুন্যফলে শিবে ভক্তি হয় ।।
সকল কামনা হীন হইয়া তখন।
ইষ্ট-পূর্ত্ত সকল কর্ম করে শিবার্পণ।।
শম্ভূ অনুগ্রহে তবে দৃঢ় হয় নর।
বিঘ্ন হেতু ভয়ে ডরে যত সুরেশ্বর।।
বিঘ্ন দূরীকৃত হলে ভক্তি তৃষ্ণা জাগে।
শিব চরিত শুনি মনে বড় ভাল লাগে।।
শুনিতে শুনিতে কথা জ্ঞান উপজয়।
শিব জ্ঞান হলে পরে তবে মুক্তি হয়।।
কি কহিব কি বলিব শিবে ভক্তি অতি।
পঞ্চপাপ কোটিপাপ সকল বিমুচ্যতি।।
শিব ভক্তি সম্পন্ন অতি মূর্খ জন।
পলকেই নাশ করে সংসার বন্ধন।।
যেই জন ভক্তি করে বা করে দ্বেষ।
উভয়েরই ইচ্ছা পূরন করেন মহেশ।।
ভক্তিভরে তারে যদি দাও ফুল ও জল।
ত্রি জগত দেন তিনি হইয়া কুশল।।
ফুল-জল নাহি পাও কর নমস্কার।
অর্দ্ধ প্রদক্ষিণে তিনি হন চমৎকার।।
প্রদক্ষিণে অশক্ত হও কর চিন্তা তাহে।
সর্ব্ব অভীষ্ট সিদ্ধ হবে শিব অনুগ্রহে।।
বেলকাঠের চন্দন আর বন্য পুষ্প-ফলে।
যে জন প্রীত হয় ভক্তি সহ দিলে।।
তার সেবা করা বল কি আর দুষ্কর।
কিছু না পাহিলে তবে হাত জোড় কর।।
বন্য দ্রব্যে তিনি হন যাদৃশী খুশী।
গ্রাম্য দ্রব্যে উত্তম দ্রব্যে না হন তাদৃশী।।
সুখলভ্য শম্ভূ ছাড়ি যে পূজে অন্য নাম।
ভাগীরথী ছাড়ি সে মৃগতৃষ্ণিকাম্।।
নমস্কার দাদা,
ReplyDeleteআশা করি ভালো আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমাকে শিব গীতার সবগুলো অধ্যায় যদি আমার জিমেইল lovelybd21@gmail.com এটাতে পাঠাতেন খুব উপকার হতো দাদা।আপনার অপেক্ষায় থাকলাম।
নমস্কার াদদা