Social Icons

twitterfacebookgoogle pluslinkedinrss feedemail

Wednesday, December 25, 2013

Circulation



শবাসন




শবাসন যোগশাস্ত্রে বর্ণিত আসন বিশেষ।  শবের (মৃতদেহ) ভঙ্গিমায় এই  আসন করা হয় শবলেএর এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।
পদ্ধতি
১. দুই হাত শরীরের দুই পাশে মেলে রেখে সটান চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এই সময় হাতের তালু থাকবে উপরের দিকে এবং একটু বাইরের দিকে হেলানো থাকবে।
২. পা দুটোর মাঝে কিছুটা ফাঁক রাখুন। এই সময় পায়ের পাতা বাইরের দিকে একটু হেলে থাকবে।
৩. সমস্ত শরীরকে শয়ন তলের উপর ছেড়ে দিন। 
৪. খুব ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে থাকুন। এবার মনকে সমস্ত চিন্তামূক্ত করুন এবং শরীরকে শিথিল করে দিন। তাতে প্রথমে শরীরটাকে ভার মনে হবে। পরে শরীরের উপস্থিতিকে ভুলে যাবার চেষ্টা করতে হবে। ফলে একসময় পুরো শরীরকে হাল্কা মনে হবে। মূলত এই  
আসনটি সহজ। কারণ এর দৈহিক  ভঙ্গিমা অত্যন্ত সহজ। আবার এটি সবচেয়ে কঠিনও বটে। কারণমনকে সংযত করেশরীরকে অগ্রাহ্য করেচিন্তাশূন্য অবস্থায় অবস্থান করাটা অতটা সহজ ব্যাপার নয়।
মূলত এই  আসনটি করা হয়অন্য আসনের শেষে বিশ্রাম করার জন্য। এক্ষেত্রে একটি  আসন যতক্ষণ করবেনঠিক ততক্ষণই শবাসন থাকবেন। অন্য 
আসন ছাড়াও শারীরীক ও মানসিক বিশ্রামের জন্য শুধু শবাসন করতে পারেন।  
উপকারিতা
১. উচ্চ-রক্তচাপের রোগীরা এই  আসনটি থেকে বিশেষ উপকৃত হবেন।
২. দীর্ঘক্ষণ শারীরীক বা মানসিক পরিশ্রমের পর শরীর অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লেএই  আসন দ্বারা শারীরীক ও মানসিক শক্তি পুনরুদ্ধার  সম্ভব হয়।
৩. স্নায়বিক দুর্বলতাঅনিদ্রাঅবসাদ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই  আসন অত্যন্ত  ফলপ্রসু ফলাফল প্রদান করে থাকে।

পদ্মাসন


পদ্মাসন যোগশাস্ত্রে বর্ণিত আসন বিশেষ। এই আসনে পায়ের বিন্যাস পদ্মফুলের পাপড়ির মতো বিকশিত অবস্থায় স্থাপিত হয় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে পদ্মাসন (পদ্ম + আসন)। এই আসনের কিছুটা পরিবর্তন করে বা অন্যান্য আসনের সাথে যুক্ত করেএর বিভিন্ন প্রকরণের সৃষ্টি হয়েছে। এই দুইটি শ্রেণী বিবেচনায় যে সকল পদ্মাসন পাওয়া যায়সেগুলো হলো
বর্ধিত পদ্মাসন ও মিশ্র আসন : 
অধমুখ পদ্মাসন, অর্ধবদ্ধ-পদ্মাসন, উত্থিত পদ্মাসনঊর্ধ্বমুখ পদ্মাসন, করণ্ডাসন,
গর্বাসনপদ্ম-ভুজপীড়াসন, তোলাসন, পরিবৃত্ত পদ্মাসন (বদ্ধ-পদ্মাসন), পর্বতাসন স্বস্তিকাসন।অন্য আসনের সাথে যুক্ত পদ্মাসন : অর্ধবদ্ধপদ্ম-পশ্চিমোত্তানাসন, অর্ধবদ্ধপদ্ম-পশ্চিমোত্তানাসন, অর্ধবদ্ধপদ্ম-ময়ূরাসনঊর্ধ্ব-পদ্মশীর্ষাসনপদ্ম-ময়ূরাসনপিণ্ডাসন।
 

পদ্ধতি
১. প্রথমে দুই পা লম্বা করে সামনের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে কোন সমতল স্থানে বসুন। 
২. এবার ডান পা টেনে এনে বাম পায়ের উপর এমনভাবে স্থাপন করুনযেনো ডান পায়ের পাতা বাম উরুর কুচকি বরাবর স্থাপিত হয়। এবার বাম পা ভাঁজ করে ডান উরুর উপরে তুলে আনুন।
৩. এবার মেরুদণ্ড সোজা করে দুটো হাত সোজা করে উভয় হাঁটুর পাশে রাখুন। পায়ের পাতা আলগা করে দিন। একই সাথে হাতের আঙুলগুলো আলগা করে দিন। 
৪. শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে এইভাবে ৩০ সেকেণ্ড স্থির থাকুন। তারপর পা বদল করে আসনটি আবার করুন। এরপর আসনটি শেষ করে ১ মিনিট 
শবাসনে বিশ্রাম নিন।
৫. প্রাথমিক পর্যায়ে এই আসনে থাকাটা কষ্টকর মনে হলে সময়সীমা কমিয়ে দিতে পারেন। আবার অভ্যস্থ হয়ে গেলেআসন সময় ৬০ সেকেণ্ড পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারেন।
  
উপকারিতা
১. হাটুকোমরে বাত থাকলে নিরাময় হয়।
২. পায়ের ও মেরুদণ্ডের আড়ষ্টতা দূর হয়।
৩. স্মৃতি শক্তি ও মনের একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়।
৪. অনিদ্রাজনিত অসুবিধা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


Sunday, December 22, 2013

ইতি মোহ-মুদ্গর


শত্রৌ মিত্রে পুত্রে বন্ধৌ মাকুরু যত্নং বিগ্রহসন্ধৌ।
ভব সমচিত্তঃ সর্ব্বত্র ত্বং বাঞ্ছস্যচিরাদ্‌ যদি বিষ্ণুত্বং।।৯।।
শত্রু-মিত্র পুত্র-বন্ধু বান্ধব আদি যা কিছু সম্পর্ক আছে এদের সাথে এবং ঝগড়া সন্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ যত্ন করার কোন দরকার নেই। ভগবান চারিপাশে ব্যাপ্ত আছেন এই কথাটি মনে রেখে সকলের প্রতি সমান যত্ন নেওয়ার চেষ্টা সব সময়েই করা উচিত।
অষ্টকুলাচলসপ্তসমুদ্রাঃ ব্রহ্মাপুরন্দরদিনকররুদ্রাঃ।
ন ত্বং নাহং নায়ং লোকঃ তদপি কিমর্থং ক্রিয়তে শোকঃ।।১০।।
এই মহাদেশ সসাগরা জগৎ সংসার ব্রহ্মা (সৃষ্টি কর্তা), ইন্দ্র (ভোগ কর্তা), সূর্য্য (পালন কর্তা), রুদ্র (সংহার কর্তা) কতৃক পরিচালিত হয়। তুমি-আমি এই লোক সমূহে ক্ষণ ভঙ্গুর পদার্থ মাত্র। তাহলে কিসের জন্য তুমি দুখঃ শোকে জর্জরিত হয়ে থাকো!
ত্বয়ি ময়ি চান্যত্রৈকোবিষ্ণুঃ ব্যর্থং কুপ্যসি ময্যসহিষ্ণুঃ।
সর্ব্বং পশ্য আত্মনাত্মানং সর্ব্বতোৎসৃজ ভেদজ্ঞানম্‌।।১১।।
তুমি আমি আর কেউ নই আমরা সেই এক সর্ব্বঘটে পরিব্যাপ্ত ব্যাপ্তময় বিষ্ণু এর জন্য ব্যর্থই আমার প্রতি অসিহষ্ণুতা বশত রাগ করে থাকো। চেয়ে দেখ চারিদিকে যা কিছু দেখতে পাচ্ছ সব তোমারই আত্মারই অংশ, আত্মার আত্মীয়। সুতারং যত্ন সহকারে মন থেকে এই ভেদজ্ঞান দূর করে দাও।
বালস্তাবৎ ক্রীড়াসক্ত-স্তরুণস্তাবৎ তরুনীরক্তঃ।
বৃদ্ধস্তাবচ্চিন্তামগ্নঃ পরমে ব্রহ্মণি কোহপি ন লগ্নঃ।।১২।।
বালকেরা যেরকম খেলার প্রতি আসক্ত, তরুনরা যেরকম তরুনীদের প্রতি আসক্ত, বৃদ্ধেরা যে রকম বিষয় চিন্তার প্রতি আসক্ত থাকে, পরম ব্রহ্মেকে জানার জন্য সেই রকম আকুল করা আসক্তি দেখ কারো মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।
অর্থমনর্থং ভাবয় নিত্যং নাস্তি ততঃ সুখলেশঃ সত্যং।
পুত্রাদপি ধনভাজাং ভীতিঃ সর্ব্বত্রৈষা কথিতা নীতিঃ।।১৩।।
অনর্থকারী অর্থ চিন্তায় সব সময়ে ডুবে আছো কিন্তু জেনে রাখো তাতে লেশ মাত্র সত্যিকারের সুখ নেই। হে ধনী, সংসারের লোকেরা এমনকী নিজের সন্তানরাও তোমাকে যে শ্রদ্ধা ভক্তি প্রদর্শন করে তা তোমার ধন প্রাপ্ত করার জন্য। সব সময় এমনি হয়ে থাকে নীতিকথাতে তাই বলা আছে।
যাবদ্বিত্তোপার্জ্জনশক্তঃ তাবন্নিজপরিবারো রক্তঃ।
তদনু চ জরয়া জর্জ্জরদেহে বার্ত্তাং কোহপি ন পৃচ্ছতি গেহে।।১৪।।
যতদিন তুমি অর্থ উপার্জন করতে পারবে ততদিন তোমার পরিবারের সকলে তোমার খুব অনুরক্ত থাকবে। তুমি যা বলবে তাই হবে, তোমার কথায় সবাই ওঠা বসা করবে। তারপরে যখন সময়ের চক্রে জরা ব্যাধি ইত্যাদি এসে তোমার দেহে বাসা বাধবে, নড়বড়ে হয়ে তুমি বিছানায় শুয়ে থাকবে, তোমার বাড়িতেই তোমারই পরিবারের কেউ আর তোমার কথা জিজ্ঞেস করবে না, তোমার সাথে কথা বলবে না, তোমার সঞ্চিত অর্থের দ্বারা কোন সেবাদাসী নিয়োজিত হয়ে তোমার সামনে বসে খবরের কাগজ পড়বে।
কামং ক্রোধং লোভং মোহং ত্যক্ত্বাত্মানং পশ্যতি কোহহং।
আত্মজ্ঞানবিহিনা মূঢ়া স্তে পচ্যন্তে নরকে নিগূঢ়াঃ।।১৫।।
কাম, ক্রোধ, লোভ ও মোহ চেষ্টা করে পরিত্যাগ কর। নিজের আত্মাকে জানার চেষ্টা কর, তুমি কে? এই আত্মজ্ঞান না হলে তুমি মূর্খই রয়ে যাবে। এই জীবন-মৃত্যু ময় সংসারে জন্ম জন্মান্তর ধরে পচতে হবে।
ষোড়শপজ্ঝটিকাভিরশেষঃ শিষ্যানাং কথিতোহভ্যুপদেশঃ।
যেষাং নৈব করোতি বিবেকং তেষাং কঃ কুরুতে মতিরেকং।।১৬।।
এই ঝাড়া ষোলটি পদের দ্বারা শিষ্যদের সবাইকে আমি উপদেশ প্রদান করলাম। কিন্তু এতেও যার বিবেক জাগ্রত হয় না তার সেই এক পরব্রহ্মে মতি কিভাবে হবে?

-ইতি মোহ-মুদ্গর সম্পূর্ণ। 

Saturday, December 21, 2013

মোহ মুদ্গর (ভাগ- প্রথম)


তন্ত্র সাধনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জাগতিক বিষয়ে সত্য জ্ঞান। মানব মন স্বভাবত সুখ সন্ধানী। এই সুখের জন্য
মানুষের মন এই জগৎ থেকে যে সমস্ত তথ্যাবলী তার পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে পেয়ে থাকে তার মধ্যে যে গুলি সুখকর সেই গুলি স্মৃতিকোষে সঞ্চিত রাখে। বাকি গুলিকে পরিত্যাগ করে থাকে। মানুষের মনে এই জগত সম্বন্ধে এক ভ্রান্ত ধারনা হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী কেউ নয়, দায়ী একমাত্র তার মন এবং মনের স্বভাব। মনের এই স্বভাব কে আমরা মোহ বলে থাকি। এই মোহের বশে সদ বস্তু অসদ এবং অসদ বস্তু সদ বলে প্রতিভাত হতে থাকে। মনের এই ক্রিয়ার ফলে জগতের কিছু লাভ ক্ষতি হোক বা না হোক মনের হয়ে থাকে। তাই মনকে শিক্ষিত করতে হয়। এর জন্য স্বয়ং শিব স্বরূপ ভগবান শংকরাচার্য্য তার মোহ মুদ্গর নামক গ্রন্থে মনের এই ভ্রান্ত সংবেদন কে নিয়ন্ত্রিত করার কথা বলেছেন।

মুঢ় জহীহি ধনাগমতৃষ্ণাম কুরু তনুবুদ্ধে মনসি বিতৃষ্ণাম্‌।
যল্লভতে নিজকর্ম্মোপাত্তম্‌ বিত্তং তেন বিনোদয় চিত্তম্‌।।১।।
হে মূঢ় জন কেবলমাত্র অর্থ উপার্জনের তৃষ্ণা পরিত্যাগ কর। এই ধরনের চিন্তা তোমার মনকে কেবলমাত্র জাগতিক করে দেবে সুতারং মনে এর জন্য বিতৃষ্ণা সৃষ্টি কর। তোমার উত্তম কর্ম্মের দ্বারা উপার্জিত যে অর্থ তোমাকে স্বচ্ছল রাখে তার দ্বারাই তোমার মনকে খুশী রাখো।
কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ সংসারোহয়মতীববিচিত্রঃ।
কস্য ত্বং বা কুতঃ আয়াতঃ তত্ত্বং চিন্তয় তদিদং ভাতঃ।।২।।
কে তোমার স্ত্রী? কেই বা তোমার সন্তান? এই সংসার হল অতীব বিচিত্র। তুমি কার? তুমি কোথা থেকে এসেছ? তত্ত্ব সহকারে এই বিষয়ে চিন্তা করে দেখ।
মা কুরু ধনজনযৌবনগর্বম্‌ হরতি নিমেষাৎ কালঃ সর্ব্বম্‌।
মায়াময়মিদমখিলং হিত্বা ব্রহ্মপদং প্রবিশাশু বিদিত্বা।।৩।।
ধন, জন ও যৌবনের গর্ব না করাই ভাল কারন সময় এই সকলকে নিমেষে গ্রাস করে ফেলে। এই অখিল জগতকে মায়াময় জেনে সেই পরম ব্রহ্ম পরমপুরুষের চরণে আশ্রয় গ্রহন করাই তোমার পক্ষে ভালো।
নলিনীদলগতজলমতিতরলং তদ্বজ্জীবনমতিশয়চপলং।
ক্ষণমিহ সজ্জনসঙ্গতিরেকা ভবতি ভবার্ণবতরণে নৌকা।।৪।।
পদ্মপাত্রার উপর জলবিন্দু যে রকম অস্থির প্রানীর মধ্যে প্রাণও সেই রকম অস্থির। তাই এই ক্ষণজীবনে যদি ক্ষণকালের জন্যও সাধুসঙ্গ করে থাকো তাহলে এই ভব সাগরে হতে সেই সাধু সঙ্গ নৌকা হয়ে তোমাকে পার করে দেবে।
যাবজ্জনমং তাবন্মরনণং তাবজ্জননীজঠরে শয়নং।
ইহ সংসারে স্ফূটতরদোষঃ কথমিহ মানব তব সন্তোষঃ।।৫।।
প্রাক প্রসব অবস্থা, জন্ম, মৃত্যু এগুলি ক্রমাগত, এই সংসারের এই ক্ষণ ভঙ্গুর রূপ তুমি স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাও। তাহলে হে মানুষ তুমি কিসে সন্তুষ্ট থাকো?
দিনযামিন্যৌ সায়ম্প্রাতঃ শিশিরবসন্তৌ পুনরায়াতঃ।
কালঃ ক্রীড়তি গচ্ছত্যায়ুঃ তদপি ন মুঞ্চত্যাশাবায়ুঃ।।৬।।
দিন-রাত্রি, সন্ধ্যা-সকাল, শীত-বসন্ত কতবার আসে কতবার চলে যায়, সময়ের এই খেলা দেখতে দেখতে আয়ু শেষ হয়ে যায় কিন্তু তবুও এই বায়ুর মত অফুরন্ত আশা মানুষের আর ফুরায় না।
অঙ্গং গলিতং পলিতং মুণ্ডম্‌ দন্ত-বিহীনং জাতং তুণ্ডম্‌।
করধৃতকম্পিতশোভিতদণ্ডম্‌ তদপি ন মুঞ্চত্যাশাভাণ্ডম্‌।।৭।।
অঙ্গ সকল কুঁচকে গিয়ে এমন হয় যেন গলে গলে পড়ছে, মাথা থেকে সব চুল উঠে যায়, দাঁত পড়ে গিয়ে মুখ বিবর চুপসে যায়, ঠুকরে ঠুকরে হাঁটে, হাতে ধরে থাকা লাঠিটাও যখন থর থর করে কাঁপতে থাকে তখনো মানুষ এই আশা নামক ফাঁকা মাটির হাঁড়িটা ছাড়তে চায় না।
সুরবরমন্দিরতরুতলবাসঃ শয্যাভূতলমজিনং বাসঃ।
সর্ব্বপরিগ্রহভোগত্যাগঃ কস্য সুখং ন করোতি বিরাগঃ।।৮।।
সেই দেবতাদের মন্দির স্বরূপ তরুতলে যদি বাস করা হয়, পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ কে শয্যা করা হয় এবং অজিন বসন যদি পরিধান করা হয় এবং সংসারের সকল ভোগে ত্যাগে আগ্রহ না রেখে সব কিছু পরিত্যাগ করে দেওয়ার এই বৈরাগ্যভাব কাকে না খুশি করে।

continue..

Tuesday, December 17, 2013

Shiv Vashikaran Mantra

This is a Attraction Mantra or Vashikaran Mantra from the Rudrayamala tantra [रुद्रयामलतन्त्रम] an ancient and rare Hindu religious text. This text is dedicated to the Rudra Avatar or the fierce manifestation of Shiva.

मंत्र

ॐ वज्रकरण शिवे रुध रुध भवे ममाई अमृत कुरु कुरु स्वाहा ll

Mantra

English Translation

Om vajrakaran shive rudh rudh bhave mamae amrut kuru swaha ll


This Mantra has to be recited 10,000 times to achieve Siddhi[Mastery].There after achieving Siddhi the following Vashikaran experiments can be practices, by the divine vibrations of this Mantra. The articles required for the Vashikaran experiments are easily available in most Ayuurveda shops in India.

1. During the Solar Eclipse the root of the white Sirpunkha [सरपुंखाकी जड़] has to be procured and made into a paste mixed with water. This paste has to be applied in the Eyes as Anjan [Anoint] doing this will bring the King [Ruler] and the public under your spell.

2. Mustaki Jad [मुस्ताकी जड़] is to be kept in the mouth and the name of the person you wish to attract has to be taken, this will bring that person under your spell of attraction.

3. Mustamul [मुस्तामूलं] if Embossed in gold will bring you happiness and lots of wealth will come your way.

4. Mustamul [मुस्तामूलं] if turned into a paste along with Sandalwood and if applied on your forehead as Tilak [Religious Mark applied with thumb] will attract any member of the opposite sex who sees the Tilak.

5.Mansil [मनसिल], Gorochan [गोरोचन] and Mustaki Jad [मुस्ताकी जड़] if mixed into water and turned into a paste, and applied as Tilak [Religious Mark applied with thumb] taking the name of the person you wish to attract, will bring that person under your spell of attraction.

Disclaimer-These Mantras and experiments have been given for information purposes only.

Saturday, December 14, 2013

আত্মজ্ঞান নির্ণয় (ভাগ-শেষ)


বহিরন্ত যর্থাকাশং  সর্ব্বেষামেব বস্তুতঃ।
তথৈব ভাতি সদ্রূপো হ্যত্মা সাক্ষী স্বরূপতঃ।।২১।।
সকল বস্তুর মধ্যে আকাশ যেভাবে ভিতরে ও বাইরে অবস্থিতি করে বস্তু সমূহের আধার স্বরূপ অবস্থান করে, সেই ভাবে আত্মাও সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের ভিতরে ও বাইরে অবস্থিত হয়ে সাক্ষী স্বরূপ বিরাজিত থাকেন।
ন বাল্যং নাপি বৃদ্ধত্বং নাত্মনো যৌবনং জনু।
সদৈকরূপশ্চিন্মাত্রো বিকারপরিবর্জ্জিতঃ।।২২।।
আত্মার শৈশব, যৌবন ও বার্দ্ধক্য কোন কিছুই নাই। সেই আত্মা সব সময় এক এবং চিন্মাত্র। আত্মার কোন বিকারও নেই। বাল্য-যৌবন-বার্দ্ধক্য শরীরের অবস্থা কিন্তু আত্মা এই শরীরের মধ্যে অবস্থিত হয়েও শরীরের এই বিকার থেকে সর্বদাই মুক্ত থাকে।
জন্মযৌবনবার্দ্ধক্যং দেহেস্যৈব নচাত্মনঃ।
পশ্যন্তহোপি ন পশ্যন্তি মায়াপ্রাবৃতবুদ্ধয়ঃ।।২৩।।
জন্ম, যৌবন ও বার্দ্ধক্য দেহেরই এক একটি অবস্থামাত্র আত্মার নয়। যাদের বুদ্ধি মায়ার আবরণে মোড়া তারা এটা দেখেও দেখতে পান না বা বুঝতে পারেন না।
যথা শরাবতোয়স্থং রবিং পশ্যন্ত্যনেকধা।
তথৈব মায়য়া দেহে বহুধাত্মানমীক্ষতে।।২৪।।
যেভাবে অনেক গুলি জল পূর্ন পাত্রের মধ্যে সূর্য কে প্রতিফলিত দেখে আমরা ভাবি প্রত্যেক পাত্রের মধ্যেই বুঝি এক এক সূর্য্য আছে, সেই রকম বিভিন্ন দেহে সেই আত্মার প্রকাশ কে দেখে আমরা মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে ভাবি সেই এক আত্মা বুঝি অনেক।
যথা সলিলচাঞ্চল্যং মন্যতে তদগতে বিধৌ।
তথৈব বুদ্ধেশ্চাঞ্চল্যং পশ্যন্ত্যাত্মন্যকোবিদা।।২৫।।
জলরাশি আন্দোলিত হলে তার উপর প্রতিফলিত হওয়া চাঁদের ছায়া যে রকম আন্দোলিত হয় সেই রকম অজ্ঞব্যক্তি বুদ্ধির চাঞ্চল্য হলে আত্মাকেও সেই রকম চাঞ্চল্যপূর্ণ ভেবে থাকে।
ঘটস্থং যাদৃশং ব্যোম ঘটে ভগ্নেহপি তাদৃশং।
নষ্টে দেহে তথৈবাত্মা সমরূপো বিরাজতে।।২৬।।
একটা মাটির হাঁড়ির মধ্যে যে শুন্যস্থান থাকে তা ওই ঘট ভেঙে দিলে যে রকম শুন্য হয়েই অবিচল থাকে সেই রকম দেহের মধ্যেকার আত্মা দেহের বিনাশের পর সেই একই রকম থাকে তার কোন রকম ধ্বংস হয় না।
আত্মজ্ঞানমিদং দেবি পরং মৌক্ষৈকসাধনং।
জানন্নিহৈব মুক্তঃ স্যাৎ সত্যং সত্যং ন সংশয়ঃ।।২৭।।
হে দেবী আমি তোমাকে তিন সত্যি করে বলছি, আত্মজ্ঞানই একমাত্র পরম মোক্ষসাধন। যিনি এই আত্মাকে জানতে পারেন তিনি সাথে সাথেই মুক্তি লাভ করবেন এতে কোন সংশয় নেই।
ন কর্ম্মণা বিমুক্তোঃস্যান্ন মন্ত্রারাধনেন বা।
আত্মনাত্মানং বিজ্ঞায় মুক্তো ভবতি মানবঃ।।২৮।।
মানব তার কর্ম্মের দ্বারা বা মন্ত্র আরাধনার দ্বারা মুক্তি লাভ করতে পারে না। স্বীয় আত্ম র মধ্যে অবস্থিত আত্মা কে বিশেষ ভাবে জানলেই মানবের মুক্তি ঘটে থাকে।
প্রিয়োহ্যাত্বৈব সর্ব্বেষাং নাত্মনোহস্ত্যপরং প্রিয়ং।
লোকেহস্মিন্নাত্মসম্বন্ধাদ্ভবন্ত্যন্যে প্রিয়াঃ শিবে।।২৯।।
হে শিব প্রিয়ে, আত্মাই জীবসকলের পরম প্রিয়, আত্মা ছাড়া আর কিছুই প্রিয়বস্তু নেই। কিন্তু সময়ে সময়ে লোকেরা যে বিভিন্ন বস্তুকে প্রিয় বলে মনে করে থাকে তার কারন, সেই সেই বস্তু গুলির সাথে আত্মার কিছু না কিছু বিশেষ সম্বন্ধ যোগ থাকে।
জ্ঞানং জ্ঞেয়ং তথা জ্ঞাতা ত্রিতয়ং ভাতি মায়য়া।
বিচার্য্য আত্মত্রিতয়ে আত্মৈবৈকোহবশিষ্যতে।।৩০।।
এই ব্রহ্মাণ্ড মায়ার প্রভাবে জ্ঞান(যা জানা হয়), জ্ঞেয় (যাকে জানা হয়)ও জ্ঞাতা (যিনি জেনেছেন)এই তিন প্রকারে প্রকাশিত। জ্ঞান-জ্ঞেয়-জ্ঞাতা এই তিন প্রকাশিত ব্রহ্মাণ্ডদ্বারা আত্মবিচার করলে সেই অদ্বিতীয় পরমাত্মাকে অবশেষে জানা যায়, অবশেষ রূপে জানা যায়। যতক্ষন পর্যন্ত না মানুষের তত্ত্বজ্ঞান না হয় ততক্ষন চোখ,কান, নাক, জিভ, ত্বক ও মনকে, জ্ঞান, শব্দ, রূপ ও রসাদি সমুদয়কে জ্ঞেয় এবং নিজেকে জ্ঞাতা বলে তারা মনে করেন। কিন্তু যখন তার তত্বজ্ঞান হয়ে যায় তখন সে এই ব্রহ্মাণ্ডের সকল বস্তুর রূপ-নাম ইত্যাদি পরিত্যাগ করে ঐ জ্ঞান, জ্ঞেয়, জ্ঞাতা এই তিন ভিন্ন পদার্থকে সেই এক ও অখণ্ড পরমাত্মা বলে বিশেষ ভাবে অবগত হতে পারে।
জ্ঞানমাত্মৈব চিদ্রূপো জ্ঞেয় স্তাত্মৈব চিন্ময়ং।
বিজ্ঞাতা স্বয়মেবাত্মা যো জানাতি স আত্মবিৎ।।৩১।।
আত্মজ্ঞানের দ্বারা সেই চিদরূপী আত্মাকে জ্ঞানরূপে, সেই চিন্ময় আত্মাকে জ্ঞেয় রূপে, এবং আপন অন্তর স্থিত আত্মাকে জ্ঞানীরূপে যিনি জানতে পারেন তিনিই আত্মদর্শী। জ্ঞান-জ্ঞেয়-জ্ঞাতা এই তিনি পদার্থকেই যিনি আপন চিদাত্মারূপে জানেন তিনিই আত্মজ্ঞানী।
এতত্তে কথিতং জ্ঞানং সাক্ষান্নির্ব্বাণকারণং।
চতুর্ব্বিধাবধুতানামেতদেব পরমং ধনম্‌।।৩২।।
হে দেবী, সাক্ষাৎ নির্ব্বাণ(মুক্তির) কারণ স্বরূপ যে আত্মজ্ঞান এতক্ষন আমি তোমাকে বললাম, তা চার প্রকার অবধূতদের মহাধন বলে জানবে।

-ইতি আত্মজ্ঞান নির্ণয়।

Friday, December 13, 2013

রসুন (Allium sativum)



রসুন হল পিঁয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁঝালো সবজি যা রান্নার মশলা ও ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
রসুন গাছ একটি সপুষ্পক একবীজপত্রী লিলি শ্রেণীর বহুবর্ষজীবী গুল্ম।
বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালিয়াম স্যাটিভাম (Allium sativum)।
রসুন গাছের বিটপের নিম্নাংশ পরিবর্তিত হয়ে বাল্ব জাতীয় সঞ্চয়ী অঙ্গ তৈরি করে যা মশলা হিসাবে রান্নায় ব্যাবহৃত হয়। পিয়াঁজের সঙ্গে প্রধান পার্থক্য হল সাদা রঙ এবং অনেক কোয়ার গুচ্ছ।

আত্মজ্ঞান নির্ণয় (ভাগ-২)


মৃৎশিলাধাতুদর্ব্বাদিমূর্ত্তাবীশ্বরবুদ্ধয়ঃ।
ক্লিশ্যন্ত স্তপসা জ্ঞানং বিনা মোক্ষং ন যান্তি তে।।১১।
মাটি, পাথর, ধাতু ও কাঠ ইত্যাদি দ্বারা নির্মিত ঈশ্বরের মূর্ত্তিকে ভগবান জ্ঞানে তপস্যা করে করে হাজার ক্লেশ সহ্য করলেও যদি ব্যাক্তির তত্ত্বজ্ঞান না জন্মায় তাহলে তার মুক্তি সম্ভব হয় না।
অহো রসসমাহৃষ্টা যথেষ্টাহার-তণ্ডুলাঃ।
ব্রহ্মজ্ঞানবিহীনাশ্চেৎ নিষ্কৃতিস্তে ব্রজন্তি কিম্‌।।১২।।
নানা ধরনের রস ভোগ করে হৃষ্ট, নানা ধরনের শস্যকে আহার করে পুষ্ট দেহ লাভ করা যায় কিন্তু যারা ব্রহ্মজ্ঞান বিহীন তারা কি করে নিষ্কৃতি লাভ করতে পারে!
বায়ুপর্ণকণাতোয়প্রাশিনো মোক্ষভাগিনঃ।
সন্তি চেৎ পন্নগা মুক্তাঃ পশুপক্ষি-জলচরাঃ।।১৩।।
বাতাস, গাছের পাতা, শস্যকণা ও জল ইত্যাদি দ্রব্য গ্রহণ করলেই যদি মোক্ষপ্রাপ্তির যোগ্য হওয়া যেত তাহলে পশু,পক্ষী, জলচরজীব ইত্যাদি প্রানীগণও নিশ্চয় মুক্ত হয়ে যেত যেহেতু তারাও ওই সব জিনিস আহার হিসাবে গ্রহণ করে থাকে।
উত্তমো ব্রহ্মসদ্ভাবো ধ্যানভাবস্তু মধ্যমঃ।
স্তুতির্জপোহধমো ভাবো বাহ্যপূজাধমাধমা।।১৪।।
জীবগণের পক্ষে একমাত্র ব্রহ্ম সদ্ভাব উত্তম। ধ্যানভাব মধ্যম, স্তুতি-জপ ভাব ইত্যাদি অধম এবং বাহ্যপূজাভাব একেবারেই অধমের থেকেও অধম।
যোগো জীবাত্মনোরৈকং পূজনং শিবকেশবে।
সর্ব্বং ব্রহ্মেতি বিদুষো ন যোগো ন চ পূজনম্‌।।১৫।।
জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার যে একতা তার উপলব্ধিই যোগ। শিব এবং বিষ্ণুর যে উপাসনা মনে মনে অহরহ করা যায় তাইই একমাত্র পূজা। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান, আবিষ্কৃত-অনাবিষ্কৃত সকল পদার্থের মধ্যে সেই এক ও অভিন্ন পরমব্রহ্মকে যিনি উপলব্ধি করতে পারেন তার আর যোগেরও দরকার থাকে না, পূজারও দরকার থাকে না।
ব্রহ্মজ্ঞানং পরং জ্ঞানং যস্য চিত্তে বিরাজতে।
কিন্তস্য জপযজ্ঞাদ্যৈস্তপোভির্নিয়মব্রতৈঃ।।১৬।।
ব্রহ্মজ্ঞানই পরম জ্ঞান – যার চিত্তের মধ্যে সর্বদাই ব্রহ্মজ্ঞান বিরাজ করে তার জপ, যজ্ঞ, তপ, ব্রতপালন ইত্যাদি নিয়মের কি প্রয়োজন !
সত্যং বিজ্ঞানমানন্দমেকং ব্রহ্মেতি পশ্যতঃ।
স্বভাবাদ্ব্রহ্মভূতস্য কিং পূজাধ্যনধারণাঃ।।১৭।।
সত্য, বিজ্ঞান ও আনন্দময় দৃষ্টি সহকারে যিনি সর্বদা সর্বভূতে সেই পরমব্রহ্মকে দেখতে পান, সেই স্বভাবতঃ ব্রহ্মভাবময় ব্যাক্তির পূজা, ধ্যান, ধরনা আর কি হতে পারে!
ন পাপং নৈব সুকৃতং ন স্বর্গো ন পুনর্ভবঃ।
নাপি ধ্যেয়ো ন বা ধ্যাতা সর্ব্বং ব্রহ্মেতি জ্ঞানতঃ।।১৮।।
ব্রহ্ম সর্ব্বময় এই জ্ঞান যার হয়েছে তার আর পাপ-পুন্য, স্বর্গ-নরক, ধ্যাতা-ধ্যেয় এসব কিছুই থাকে না।
অয়মাত্মা সদা মুক্তো নির্লিপ্তঃ সর্ব্ববস্তুষু।
কিন্তস্য বন্ধনং কর্ম্মান্মুক্তিমিচ্ছন্তি দুর্ধিয়ঃ।।১৯।।
আত্মাকে ভগবান ব্যাখা করেছেন সদা মুক্ত বলে। পদ্মপাতার উপর জল যেমন সেই পাতার উপর থেকেও তাতে লিপ্ত হয় না তেমনই আত্মা এই দেহের মধ্যে থেকেও সংসারের কোন বস্তুতেই লিপ্ত হয় না। তাহলে কেন মূর্খের মত এই আত্মার মুক্তি লাভের জন্য কোন বন্ধন থেকে তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করা হয়, সে তো সদামুক্ত তার আবার বন্ধন কি!
স্বমায়ারচিতং বিশ্বমবিতর্কং সুরৈরপি।
স্বয়ং বিরাজতে তত্র পরমাত্মাহ্যপ্রবিষ্টবৎ।।২০।।
পরমাত্মা নিজের মায়া দ্বারা সৃষ্ট এই বিশ্বসংসারে নিজে প্রবেশ না করেই প্রবেশিত ভাবে বিরাজ করছেন –দেবতারাও এই বিষয়ে কোন বিতর্কের অবকাশ রাখেন না।(continue..)

Tuesday, December 10, 2013

আত্মজ্ঞান নির্ণয় (ভাগ-১)


যাবন্ন ক্ষীয়তে কর্ম্ম শুভঞ্চাশুভজেন বা।
তাবন্নাজায়তে মোক্ষো নৃণাং কল্পশতৈরপি।।১।।
মানুষের যতক্ষণ পর্যন্ত শুভাশুভ ফল ভোগী কর্ম লয় প্রাপ্ত না হয় ততদিন শত কল্প বিগত হলেও মানুষের মোক্ষ লাভ হয় না। কারণ মানুষ যতক্ষণ না তার সমস্ত কর্ম পরিত্যাগ করে বা কর্মের কর্তা হিসাবে নিজেকে ফলাফল ভোগী মনে করবে সেই কর্ম ফল মানুষকে মুক্ত হতে দেয় না এবং বারে বারে তাকে এই জীবন চক্রের পীড়া সহ্য করতে হবে। তাই নানা জায়গায় ভগবান বারে বারে বলেছেন কর্ম করে যাও এবং কর্মের কর্তা হিসাবে ভগবান কে মনে কর। তাহলে কর্ম ফল সেই মহান কর্তার উপরে বর্তাবে এবং জীব পাপ পুণ্য বিরহিত হয়ে সেই অমৃত লোকের সন্ধান পাবে।
যথা লৌহময়ৈঃ পাশৈঃ পাশৈঃ স্বর্ণময়ৈরপি।
তাবদ্বদ্ধো ভবেজ্জীবঃ কর্ম্মভিশ্চ শুভাশুভৈঃ।।২।।
শৃঙ্খল সে লোহার হোক বা সোনার হোক তা কেবল বেঁধে রাখতেই কাজে লাগে সেই রকম কর্মফল শুভ হোক বা অশুভ তা জীবকে বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে। তাই জীব যতক্ষণ না তার সমস্ত কর্ম সেই মহান শিব চরণে অর্পিত করে ততক্ষণ তার কর্ম বন্ধন হতে মুক্তি লাভ হয় না।
কুর্ব্বাণঃ সততং কর্ম্ম কৃত্বা কষ্টশতান্যপি।
তাবন্ন লভতে মোক্ষং যাবৎ জ্ঞানং ন জায়তে।।৩।।
শত কষ্ট সহ্য করেও যদি সর্বদা কর্মে রত থাকা যায় তবুও মোক্ষ লাভ হয় না যতক্ষণ না জীবের আত্ম জ্ঞান হয়। যাগ-যজ্ঞ, জপ-তপ, ব্রত-উপবাস ইত্যাদি কর্ম মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করে করে থাকে। কিন্তু মানুষের মধ্যে যতক্ষণ না পূর্ণ জ্ঞানের প্রকাশ হয় ততক্ষণ এই সমস্ত কর্মের দ্বারা সে মোক্ষ লাভ করাতে পারে না। তাই মানুষের উচিত সর্ব প্রকারে সেই চেষ্টা করা যাতে মানুষের আত্ম জ্ঞান লাভ হয়ে থাকে।
জ্ঞানং তত্ত্ববিচারেণ নিষ্কামেনাপি কর্ম্মণা।
জায়তে ক্ষীনতমসাং বিদুষাং নির্ম্মলাত্মনাম্‌।।৪।।
জ্ঞানের দ্বারা তত্ত্ব সমূহকে বিচার করে ও নিষ্কাম ভাবে সকল কর্ম সম্পাদন করলে মনের অন্ধকার নাশ হতে থাকে এবং জীব বিদ্বান ও নির্ম্মলাত্মা হয়ে ওঠে। মানুষ জ্ঞানের আলোকে আলোকিত হতে থাকে।
ব্রহ্মাদিতৃণপর্য্যন্তং মায়য়া কল্পিতং জগৎ।
সত্যমেকং পরং ব্রহ্ম বিদিত্বৈবং সুখী ভবেৎ।।৫।।
ব্রহ্মাদি দেবতা থেকে সামান্য ঘাস অবধি সকল পদার্থে পূর্ণ এই জগত হল মায়া দ্বারা কল্পিত। তাই যিনি সেই একমাত্র সত্য পরম পুরুষ কে জানতে পারেন তিনিই প্রকৃত সুখী হতে পারেন।
বিহায় নামরূপাণি নিত্যে ব্রহ্মণি নিশ্চলে।
পরিনিশ্চিততত্ত্বো যঃ স মুক্তঃ কর্ম্মবন্ধনাৎ।।৬।।
নাম এবং রূপ পরিত্যাগ করে যিনি সেই নিত্য নিশ্চল ব্রহ্মকে তত্ব সহকারে জেনেছেন তিনি নিশ্চয় এই শুভাশুভ কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছেন। এই দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান জগত কে আমরা নির্দিষ্ট নাম এবং আকার অনুযায়ী জেনে থাকি, কিন্তু যিনি এই সমস্ত জগতে একমাত্র সেই পরম পুরুষ কে দেখতে পান তিনি যথার্থ জ্ঞানী হওয়ার জন্য তিনি মুক্ত।
ন মুক্তির্জপনাদ্ধোমাদুপবাসশতৈরপি।
ব্রহ্মৈবাহমিতি জ্ঞাত্বা মুক্তো ভবতি দেহভৃৎ।।৭।।
জপ, হোম ও শত শত উপবাস করলেও জীব মুক্তি লাভ করে না। কিন্তু সেই ব্রহ্মকে নিজের স্বরূপ হিসাবে দেখতে পেলেই এই দেহ ধারণ করেই মোক্ষ লাভ হয়ে থাকে। সেই পরম পুরুষ যদি সর্ব ব্যাপক হয়ে থাকেন তাহলে আমার মধ্যেও নিশ্চয় তিনি আছেন, তাই আমার মধ্যে তাকে যখন আমি আবিষ্কার করে থাকি তখন আমার স্বরূপ উপলব্ধি হয়ে থাকে। আর এই উপলব্ধি বিশেষ জ্ঞানের উৎপত্তিস্থল এবং এই বিশেষ জ্ঞান হয়ে থাকলেই জীব সমদর্শী হয়ে মুক্তি লাভ করে থাকে।
আত্মা সাক্ষী বিভু: পূর্ণ: সত্যেহদ্বৈতঃ পরাৎপরঃ।
দেহস্থোহপি ন দেহস্থো জ্ঞাত্বৈবং মুক্তিভাগ্‌ভবেৎ।।৮।।
আত্মা কে জাগ্রত, নিদ্রিত ও সুষুপ্ত এই তিন অবস্থার সাক্ষীস্বরূপ, সর্বব্যাপী ষড়ৈশ্বর্য্যপূর্ণ, সত্য, অদ্বৈত, পরাৎপর অথচ এই দেহস্থ হয়েও দেহস্থ নয় এইভাবে যিনি জেনেছেন তিনি মোক্ষলাভ করে থাকেন।
বালক্রীড়ানকং সর্ব্বং রূপনামাদিকল্পনাম্‌।
বিহায় ব্রহ্মনিষ্ঠো যঃ স মুক্তো নাত্র সংশয়ঃ।।৯।।
বাচ্চাদের খেলনার মত যিনি এই মায়াকল্পিত নাম রূপ ইত্যাদি পার্থিব সামগ্রিকে পরিত্যাগ করে কেবল মাত্র ব্রহ্মনিষ্ঠ হয়ে থাকেন তিনি যে সদা মুক্ত তাতে কোণ সন্দেহ নেই। বাচ্চারা যেমন খেলনা নিয়ে খেলার সময় এই পুতুল কে বাবা, ওই পুতুল কে কাকা, মাসী পিসি ইত্যাদি মনে করে খেলে এবং খেলা শেষ হলে সেই পুতুল গুলিকে মাটিতে ফেলে দিয়ে চলে যায় এবং সেই পুতুলগুলির কথা তার মনেই আসে না তেমনি যে জ্ঞানী ব্যাক্তি নাম এবং রূপ সর্বস্ব এই সংসারের মায়া কাটিয়ে সেই পরম পুরুষ শিবের ধ্যানে নিমগ্ন থাকতে পারেন তিনিই মুক্ত।
মনসা কল্পিতা মূর্ত্তি নৃণাঞ্চেন্মোক্ষসাধনী।
স্বপ্নলব্ধেন রাজ্যেন রাজানো মানবো স্তদা।।১০।।

মনের দ্বারা কল্পিত দেব-দেবীর প্রতিমূর্তি যদি জীবকে মোক্ষদান করতে পারতো তাহলে স্বপ্নে মানুষ যে নিজেকে রাজা উজির হতে দেখে তার ফলে সে রাজা হতে পারে না কেন?  মানুষ কল্পিত আকার বিশিষ্ট দেব-দেবীর উপাসনাতে মানুষের চিত্তশুদ্ধি হতে পারে সত্য কিন্তু তার দ্বারা মুক্তিলাভের আশা করা যায় না। (continue...)

Monday, December 09, 2013

শিব-গীতা

শিব-গীতা

প্রথম অধ্যায়

প্রথমে প্রনতি জানাই দেব নারায়ণে।

জয় দেবি সরস্বতি মতি শিব জ্ঞানে।।

কহিলেন সূত সব ঋষিগন প্রতি।

গীতা শাস্ত্র অধ্যয়ন মুক্তিদায়ী অতি।।

মহেশের অনুগ্রহে করিনু ব্যাখ্যান।

মহাদুখঃ তরিবার শিব উপাখ্যান।।

বেদকর্ম, দান, তপ যত করা যায়।

মানব কৈবল্যপদ কভু নাহি পায়।।

কৈবল্য লাভে পথ কিছু নাই আর।

একমাত্র জ্ঞানই পথ শুদ্ধ জ্ঞান সার।।

পুরাকালে দণ্ডবনে শুনিলেন রাম।

শিবমুখে গোপনীয় শিব উপাখ্যান।।

যা স্মরণে মানবের মুক্তি হয় ত্বরা।

স্কন্দ হতে শুনেছিল সনৎ কুমারেরা।।

ব্যাসদেব তাহা শুনে কুমার দ্বয় হতে।

কৃপা করি বলিলেন এই সূতপুতে।।

করি সাঙ্গ উপাখ্যান ব্যসদেব কহে।

কহিওনা তারে যে অধিকারী নহে।।

আমার বাক্যের যদি করহে অন্যথা।

দেবগণ রুষ্ট হয়ে শাপ দিবে তথা।।

অনন্তর জিজ্ঞাসিনু দেব বেদব্যাসে।

দেবগন রুষ্ট হবেন কিসের অভ্যাসে।।

কি কারনে তাহাদের হইবে কি হানি।

ক্রুদ্ধ হবে দেবগন ইচ্ছা হয় জানি।।

তাহা শুনি কহিলেন পরাশরসূত।

কারন শ্রবণ কর অতীব অদ্ভূত।।

নিত্য অগ্নিহোত্রে রত যতেক ব্রাহ্মণ।

কামধেনু রূপ মানে সর্ব দেবগণ।।

ভক্ষ্য, ভোজ্য, পেয় যা ইষ্ট পদে দান

স্বর্গে থেকে দেবগণ অগ্নি দ্বারা পান।।

ইহা ছাড়া দেবগনের অন্য পথ নাই।

অগ্নি ভুখ দেব মুখ বলা হয় তাই।।

গৃহ ছাড়ি দুগ্ধবতী অন্য কোথা গেলে।

গৃহ নিমজ্জিত হয় দুখঃ হলাহলে।।

বিপ্রগণ লভে যদি এই ব্রহ্ম জ্ঞান।

যাগ যজ্ঞ হীন হয় দেব দুখঃ পান।।

বিষয়ের বিষ ঢালি তাই দেবগণ

সদাই ব্যাস্ত রাখে মানবের মন।।

স্ত্রী-পুত্র-সংসারে মন ন্যাস্ত রয়।

জীবগনে শিব জ্ঞান কভু নাহি হয়।।

যদি বা শিব জ্ঞান কভু সমুদ্ভবে।

মধ্য পথে বিঘ্ন ফলে বিচ্ছিন্নতা লভে।।

দয়া করে যদি শিব দেন দরশন।

চিনেও না চিনে তারে অবিশ্বাসী মন।।

এতেক শুনি মুনিগন সূতেরে জিজ্ঞাসে।

পুরুষের মুক্তি সাধন হবে তবে কিসে।।

দেবগণ হন যদি তাহে অন্তরায়।

শিবজ্ঞান হবে তবে কহ কি উপায়।।

কহিলেন সূত - মুনি জানহ নিশ্চয়।

কোটি জন্ম পুন্যফলে শিবে ভক্তি হয় ।।

সকল কামনা হীন হইয়া তখন।

ইষ্ট-পূর্ত্ত সকল কর্ম করে শিবার্পণ।।

শম্ভূ অনুগ্রহে তবে দৃঢ় হয় নর।

বিঘ্ন হেতু ভয়ে ডরে যত সুরেশ্বর।।

বিঘ্ন দূরীকৃত হলে ভক্তি তৃষ্ণা জাগে।

শিব চরিত শুনি মনে বড় ভাল লাগে।।

শুনিতে শুনিতে কথা জ্ঞান উপজয়।

শিব জ্ঞান হলে পরে তবে মুক্তি হয়।।

কি কহিব কি বলিব শিবে ভক্তি অতি।

পঞ্চপাপ কোটিপাপ সকল বিমুচ্যতি।।

শিব ভক্তি সম্পন্ন অতি মূর্খ জন।

পলকেই নাশ করে সংসার বন্ধন।।

যেই জন ভক্তি করে বা করে দ্বেষ।

উভয়েরই ইচ্ছা পূরন করেন মহেশ।।

ভক্তিভরে তারে যদি দাও ফুল ও জল।

ত্রি জগত দেন তিনি হইয়া কুশল।।

ফুল-জল নাহি পাও কর নমস্কার।

অর্দ্ধ প্রদক্ষিণে তিনি হন চমৎকার।।

প্রদক্ষিণে অশক্ত হও কর চিন্তা তাহে।

সর্ব্ব অভীষ্ট সিদ্ধ হবে শিব অনুগ্রহে।।

বেলকাঠের চন্দন আর বন্য পুষ্প-ফলে।

যে জন প্রীত হয় ভক্তি সহ দিলে।।

তার সেবা করা বল কি আর দুষ্কর।

কিছু না পাহিলে তবে হাত জোড় কর।।

বন্য দ্রব্যে তিনি হন যাদৃশী খুশী।

গ্রাম্য দ্রব্যে উত্তম দ্রব্যে না হন তাদৃশী।।

সুখলভ্য শম্ভূ ছাড়ি যে পূজে অন্য নাম।

ভাগীরথী ছাড়ি সে মৃগতৃষ্ণিকাম্‌।।

বিদ্যা-অবিদ্যা

তন্ত্র সাধনা দুই রকমের হয়ে থাকে বিদ্যা সাধনা অবিদ্যা সাধনা নিজের কুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করে তার যে অপার আনন্দময় অনুভূতি তা জগৎ জীবনের উন্নতিকল্পে নিয়োজিত করা হল বিদ্যা সাধনার লক্ষ্য এবং অবিদ্যা সাধনার সাহায্যে সেই শক্তিকে জাগ্রত মনে করে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি ইত্যাদি নানা রকম আভিচারিক ক্রিয়া করে নিজের এবং অপরের পরোক্ষে ক্ষতিসাধন করা খুবই নিকৃষ্ট মানের তন্ত্র সাধনা 
আজকাল তন্ত্র সাধনার একটা হিড়িক দেখা যায় তথা কথিত তান্ত্রিক গন বশীকরণ সহ যে সমস্ত নিজ গুণ বিজ্ঞাপিত করে থাকেন তা কতদূর সম্ভাবনা ময় তা বৈজ্ঞানিক আধুনিক মানসিকতা সম্পন্ন জিজ্ঞাসুরাই ঠিক করবেন আমার আবেদন শুধু এইটুকু যে প্রতারিত হবেন না। এতে বিশ্বাস নষ্ট হয়। এই সমগ্র পৃথিবী তার অলৌকিক ক্রিয়া সমূহ নিয়ে আপনাদের সামনে সকল সময়ই প্রত্যক্ষ আছেন। শুধু শুধু কেন সামান্য মানুষের মানসিক বিকারের প্রত্যাশী হবেন। তন্ত্র বিদ্যা কেবল মাত্র প্রাচীন বিজ্ঞান। তাই তন্ত্রকে জানতে অবশ্যই বিজ্ঞানের সহায়তাতেই জানতে হবে। এর কোন অন্য পদ্ধতি নেই। সুতারং মানুষের বিশ্বাস নিয়ে ছেলে খেলা করে এমন তান্ত্রিক দের ভণ্ডামি দেখলেই প্রতিবাদ করুন।
যেনে রাখবেন সেই তান্ত্রিক শক্তিমান যে ব্রহ্মাণ্ডের সকল বস্তুর ভালো চান, সকল প্রাণীর সামান্যতম ব্যথা যার হৃদয়ে যন্ত্রণার উদ্রেক করে সেই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সাথে একাত্ম। সুখ দুখে যিনি সমদর্শী তিনি কাউকে সুখ দিতে গিয়ে অপরজনকে দুঃখ কিভাবে দিতে পারেন। তাই শত্রু বিনাশ মন্ত্র দিয়ে হয় না। তার জন্য দরকার নিজের আচরণের পরিবর্তন। আর তান্ত্রিক যদি মন্ত্র মেরে সকল কিছু করে দিতে পারতো তাহলে তার ভাত টুকু মন্ত্র মেরে যোগাড় করে নিতে কতক্ষণ সময় লাগত। টাকার বিনিময়ে তান্ত্রিক যদি কর্ম করে জানবেন সে তান্ত্রিক নয় তান্ত্রিকের রূপ ধারী শয়তান। বলা হয়ে থাকে তন্ত্র বিদ্যা দেবাদিদেব মহাদেব হতে আগত। বলুন তো মহাদেব কত টাকা নিয়েছিলেন এই বিদ্যা দেওয়ার জন্য।
তন্ত্র এই সব ঠুনকো জাগতিক ব্যাপার নয়। এ এক মহাবিদ্যা। এর সঠিক আচরণে জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে আপনার সম্যক জ্ঞান জন্মায়। যা আপনার চোখের সামনে থেকে অজ্ঞানতার আবরণ সরিয়ে পৃথিবীর সকল রহস্য কে উন্মোচিত হতে সাহায্য করে। অন্ধকার থেকে আলোর জীবনে নিয়ে আসে। আর এর প্রণেতা তিনি সেই কৈলাস শিখর নিবাসী মহান বিজ্ঞানী।
দ্রব্যগুণ দেখে যদি অবাক হয়ে থাকেন তাহলে বলি প্রত্যেক দ্রব্যের নিজস্ব গুণ তো অবশ্যই থাকবে। নুন খেলে নোনতা লাগবে, আবার ক্লোরোফর্ম শুঁকলে অজ্ঞান তো হতেই হবে। তাই অবিদ্যা তান্ত্রিকরা যদি আপনাকে দ্রব্যগুণ দেখিয়ে মোহিত করে ফেলে তার জন্য বলে রাখি মন যদি আপনার বৈজ্ঞানিক পথ না ছাড়ে তাহলে আপনার ঠকবার ভয় থাকে না।

আর একটা কথা বলা উচিত, শব্দার্থ বিচারে তন্ত্র শব্দের মানে যদি করা হয়ে থাকে শরীর সম্বন্ধীয় তাহলে তা ভুল। তন্ত্র হচ্ছে তা, যা সমস্ত জাগতিক জিনিস কে ব্যাখ্যা করে জগৎ সম্বন্ধে আমাদের ভুল ধারনা গুলিকে দূর করে অজ্ঞানতা থেকে মুক্তি দেয় বা ত্রাণ করে। আপনার সেই পঞ্চ ইন্দ্রিয় হল সেই সদাশিবের পাঁচটি মুখ যা দিয়ে আপনি এই জগত সম্বন্ধে সকল তথ্য আরহন করে থাকেন। সেই পরমেশ্বরের সকল কিছুই প্রপঞ্চ ময়। একটা প্রশ্ন নিজেকে করে দেখুন পৃথিবীর বেশীর ভাগ ফুলেই কেন পাঁচটি পাপড়ি থাকে? কি অলৌকিক না! জয় শিব শম্ভু।
 

Nataraja


Nataraj
Nataraja

Tantrik

Tantrik
Tantrik

Yabyum

Yabyum
Yabyum