দেবী বললেন- হে আদিনাথ
সাত প্রকার ধাতু কি কি? আত্মা, অন্তরাত্মা এবং পরমাত্মাই বা কি তা আমাকে বলুন?
মহাদেব বললেন- শুক্র
(বীর্য্য), শোণিত (রক্ত), মজ্জা, মেদ (চর্বি), মাংস এই পাঁচটি এবং অস্থি (হাড়) ও
ত্বক এই সাত প্রকার ধাতু প্রত্যেক শরীরে অবস্থিত আছে। এই শরীরই আত্মা, মন হল
অন্তরাত্মা এবং পরমাত্মা হল শূন্য যেখানে মন বিলীন হয়ে যায়। রক্তধাতু হল মাতা,
শুক্রধাতু হল পিতা প্রাণ হল শুন্যধাতু এই শুক্র ও শোণিতের মিলনেই প্রাণ সমন্বিত
গর্ভপিন্ড উৎপন্ন হয়ে থাকে। দেবী বললেন – কিভাবে বাক্যের উৎপত্তি হয় এবং কিভাবে
বাক্যের লয়প্রাপ্তি ঘটে থাকে? বাক্য কিভাবে আমরা নির্ধারিত করতে পারি এবং আমাকে
সেই বাক্যজ্ঞান উদাহরন সহকারে ব্যাখা করে বুঝিয়ে দিন। মহাদেব বললেন- অব্যক্ত হতে
প্রান সৃষ্টি হয়, প্রাণ হতে মনের এবং মানস হতে বাক্যের সৃষ্টি হয় এবং মনেই বাক্য
বিলীন হয়ে যায়। দেবী বললেন- দেহের কোন স্থানে সূর্যের অবস্থান, কোন স্থানে
চন্দ্রের অবস্থান, কোন স্থানে বায়ুর অবস্থান এবং কোন স্থানেই বা মনের অবস্থান তা
আমাকে বলুন? মহাদেব বললেন – তালুমুলে চন্দ্রের অবস্থান, নাভিমুলে সূর্য্যের
অবস্থান। এবং সূর্যের অগ্রভাগে বায়ু ও চন্দ্রের অগ্রভাগে মনের অবস্থান। হে মহাদেবি
সূর্য্যের অগ্রভাগে চিত্তের এবং চন্দ্রের অগ্রভাগে প্রাণের এই অবস্থান সম্বন্ধীয়
যুক্তি গুরুর উপদেশ ক্রমে লাভ হয়ে থাকে। দেবী বললেন- দেহের কোন স্থানে শক্তির অবস্থান, কোন স্থানে শিবের অবস্থান, কোন স্থানে
কাল অবস্থান করেন? দেহের মধ্যে জরার কিভাবে ও কেন উৎপত্তি হয়ে থাকে তা আমাকে বলুন।
মহাদেব বললেন- পাতালে শক্তি, ব্রহ্মাণ্ডে শিব ও অন্তরীক্ষে কালের অবস্থান এবং এই
কাল হতেই জরার উৎপত্তি হয়ে থাকে। দেবী বললেন- আহার কে আকাঙ্খা করে, কে পান ভোজনে
তৃপ্ত হয়? কার বুদ্ধিই বা জাগ্রত, স্বপ্ন বা নিদ্রিত অবস্থায় ক্রিয়াশীল থাকে?
মহাদেব বললেন- প্রান আহারের আকাঙ্খা করে। অগ্নি পান-ভোজনের দ্বারা তৃপ্ত হয় আর
বায়ু জাগ্রত, স্বপ্ন ও সুষুপ্ত অবস্থায় প্রতিবুদ্ধ থাকে। দেবী তখন জিজ্ঞেস করলেন –
হে মহাদেব কর্ম কে করে? কেইবা পাপে লিপ্ত হয়? কে পাপকার্য্য সম্পাদন করে এবং কেইবা
সে পাপ হতে মুক্তি লাভ করে থাকে? মহাদেব বললেন- মনই পাপ করে, মনই পাপে লিপ্ত হয়ে
থাকে এবং সেই মনই যখন উণ্মনা(মুক্ত) হয় তখন আর তার পাপ পুণ্য থাকে না।
(শ্লোক-৩১-৪৫)
No comments:
Post a Comment